রূপবানি খাতুন। বয়স তার মনে নেই। আইডি কার্ডে লিখা আছে। ত্রাণ নিতে এসেছিলেন নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে। না পেয়ে হতাশ হয়ে এক কোনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন তিনি। বিড় বিড় করে বলছিলেন, মহামারি করোনা তার আয় কেড়ে নেয়ায় এখন মানুষের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে খেতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই ) খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যেগে একযোগে ৩১ টি ওয়ার্ডে করোনাকালীন লকডাউনে অসহায় মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। পাঁচ কেজি চাল ও নগদ ১ শ টাকা করে ২ শ পঞ্চাশ জন মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
ত্রাণের সংবাদ শুনে রায়পাড়া থেকে ছুটে এসেছিলেন সত্তরোর্ধ রূপবানি খাতুন। তিনি জানান, এক সময়ে স্বামী সংসার সবই ছিল। দাম্পত্য জীবনে তার তিনটি মেয়ে মাত্র, ছেলে সন্তান নেই। ২০ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যান। মারা যাওয়ার পর জীবনযুদ্ধে নামেন। এরই মধ্যে তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। বড় মেয়ে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। সন্তানরা তাকে ত্যাগ করে চলে গেছে। মা হয়ে তিনি সন্তানকে ফেলতে পারেনি। ঝি এর কাজ করে মেয়ের চিকিৎসা ও ভালই চলছিল তার সংসার। গত দেড় বছর করোনা ভাইরাসের কারণে তার আয় কমে গেছে। অনেক বাসার মালিক কাজে আসতে নিষেধ করেছেন। এরপর থেকে তিনি মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিযে কোন রকম বেঁচে আছে। বাসা ভাড়া ঠিকমতো দিতে না পারায় বাড়ির মালিকের কথা শুনতে হয়। মেয়েটি আমার কাছে না থাকলে তিনি মানুষের বাড়ির বারান্দা অথবা রাস্তা ঘাটে থেকে জীবন যাপন করতেন। একা পেটের কোন চিন্তা নেই।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মাজেদা খাতুন জানান, উনি যখন এসেছেন তখন সকল মালামাল শেষ হয়ে গেছে। তিনি ওই বয়স্ক মহিলার কথা শুনে তাকে ৫ শ টাকা দিয়ে সহায়তা করেন। ভবিষ্যতে এরকম সাহায্য সহযোগিতা আসলে ভাসমান মানুষেরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানান কাউন্সিলর।
খুলনা গেজেট/এএ