খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

ওয়াসা খোঁড়াখুঁড়ি : ৯২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়েও সড়ক সংস্কার করছে না কেসিসি

এ এইচ হিমালয়

পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ বসাতে খুলনা নগরীর বিভিন্ন সড়কে চলছে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি। ইতোমধ্যে শতাধিক সড়ক খুঁড়ে ৫৯ কিলোমিটার পাইপ এবং সাড়ে ৪ হাজার ম্যানহোল ও পিট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু কাজ শেষ হলেও সড়কগুলো সংস্কার করা হচ্ছে না। মাসের পর মাস সেভাবেই পড়ে থাকছে সড়ক। ভাঙাচোরা সড়কে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক খুঁড়ে পাইপ বসানোর পর সেটি সংস্কারের দায়িত্ব কেসিসির। এজন্য তিনটি ধাপে কেসিসিকে ৯২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সংস্থাটি। এখন বাকি দায়িত্ব কেসিসির।

কেসিসির কর্মকর্তারা জানান, ৩৩টি সড়ক সংষ্কারের দরপত্র সোমবার গ্রহণ করা হয়েছে। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে আগামী মাসের শুরু থেকে সংস্কার কাজ শুরু হবে।

ওয়াসা ও কেসিসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে ‘খুলনা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ শুরু করে ওয়াসা। প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন সড়কে পাইপলাইন, ম্যানহোল ও পিট বসানো হচ্ছে। সড়ক খোঁড়ার আগে কেসিসির সঙ্গে ওয়াসার লিখিত চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সড়ক খোঁড়ার জন্য ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কেসিসিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। ওয়াসার কাজ শেষ হলে কেসিসি সড়ক মেরামত করবে।

নগরীর বড় মির্জাপুর সড়কের অবস্থা। প্রায় ৬ মাস আগে সড়কের কাজ শেষ করেছে ওয়াসা।

সূত্রটি জানায়, চুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে নগরীর বড় মির্জাপুর রোড, আহসান আহমেদ রোড, শেখপাড়া হাজী ইসমাইল রোডসহ বেশ কিছু সড়ক মেরামত করেছে কেসিসি। কিন্তু বেশিরভাগ সড়কই মেরামতের বাইরে রয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ আগে ওয়াসার কাজ শেষ হওয়া ৬৭টি সড়ক এবং ৭৭টি গলির তালিকা মেয়রের কাছে প্রদান করা হয়।

এর মধ্যে রয়েছে নিরালার ১৩টি, প্রান্তিকার ৮টি, কাসেমনগরের দুটি, জাহিদুর রহমান সড়ক, মুসলমানপাড়া মেইন রোড ও ক্রস রোড, সোলায়মানগর মেইন রোড, সোনাডাঙ্গা প্রথম ফেজ, হাসানবাগ, খালাসী মাদ্রাসা রোড, সামছুর রহমান রোড, হাজী মেহের আলী রোড, বড় মির্জাপুরসহ অসংখ্য সড়ক।

নগরীর মিয়াপাড়া পাইপের মোড় মসজিদ রোডের বাসিন্দা আহমেদ মুসা বলেন, সড়ক মেরামত না করায় রিক্সা তো দূরের কথা মটর সাইকেলও ঢোকে না। অসুস্থ, বৃদ্ধদের নিতে হয় কোলে করে। চালের বস্তা নিতে গেলেও প্রধান সড়ক থেকে মাথায় করে নিতে হয়। কিছুদিন আগে সড়কে পড়ে আমার মেয়ের পা কেটে গেছে।

নগরীর মিয়াপাড়া পাইপ মোড়ের মসজিদ গলির দৃশ্য। ৫ মাসে ওয়াসা সড়কটিতে ম্যানহোল বসিয়েছে। সংস্কার না করায় সড়কে যাতায়াতের উপায় নেই

নিরালা প্রান্তিক আবাসিক এলাকার ১০নং সড়কের বাসিন্দা শেখ আল এহসান পূর্বাঞ্চলকে বলেন, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে প্রায় একবছর ধরে সড়কটি চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত জুলাই মাসে ওয়াসার কাজ শেষ হওয়ায় ভেবেছি, এবার সড়কটি সংস্কার করা হবে। কিন্তু ৬ মাস অতিবাহিত হলেও সড়ক মেরামতের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ভাঙাচোরা সড়কে যাতায়াতে সবাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

ওয়াসার পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খান সেলিম আহমেদ বলেন, কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কগুলো যাতে মেরামত করা হয়, এজন্য ৩টি ধাপে কেসিসিকে ৯২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা দ্রুত সড়ক মেরামত করবে।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ সড়ক মেরামতে দেরি করায় জনগণ ওয়াসাকে গাল দেয়, অথচ সড়ক সংস্কারের দায়িত্ব কেসিসির। দ্রুত যাতে সড়কগুলো মেরামত করা হয় এজন্য কাজ শেষ হওয়া সড়কগুলোর তালিকা কেসিসিকে প্রদান করা হয়েছে।

কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, ৩৩টি সড়কগুলো মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। গতকাল ছিলো জমা দেওয়ার শেষ দিন। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করে মার্চের শুরু থেকেই সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সব সড়কই সংস্কার করা হবে।

সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, দ্রুত সড়ক মেরামত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!