ছেলেকে সরকারী চাকুরীর প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে সর্বস্ব বিক্রীর ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রতারককে তুলে দিয়ে পথের ভিখারী হয়েছিলেন সাতক্ষীরার আশাশুনীর ব্রহ্মরাজপুর মাছখোলার মাছুরা খাতুন (৬৫)। গত ১০ বছরে ছেলের চাকুরী কিংবা লগ্নীকৃত টাকার কোনটাই ফিরে না পেয়ে মাছুরার জীবিকা নির্বাহ হয় ভিক্ষাবৃত্তির অর্থে।
ঠিক ১০ বছর পর পাইকগাছা থানা ওসির হস্তক্ষেপে উপজেলার আগড়ঘাটার জনৈক আয়ুবআলীর কাছ থেকে অসহায় ভিক্ষুক মাছুরা ফিরে পাচ্ছেন সেই টাকা। থানা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ভিক্ষুক মাছুরা বেগম জানান, পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের আগড়ঘাটার সিলেমানপুর গ্রামের জনৈক আয়ুব আলী প্রায় ১০ বছর আগে সাতক্ষীরার আশাশুনী উপজেলার ব্রক্ষ্মরাজপুর মাছখোলার জনৈকা মাছুরা খাতুনকে তার ছেলের সরকারি চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহন করেন।
মাছুরা খাতুন জানান, তিনি একজন ভূমিহীন। গবাদি পশুপালন করেই চলতো তার জীবন-জীবিকা। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে আগড়ঘাটার আয়ুব আলী তার ছেলেকে সরকারী চাকরী পাইয়ে দিবে বলে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহন করেছিলেন। ঐসময় তিনি তার কথা মত একমাত্র সম্বল গরু-ছাগল বিক্রি করে তার দাবির টাকার যোগান দেন। তবে গত ১০ বছরে তাকে চাকুরী কিংবা টাকা কোনটাই ফেরৎ দিতে পারেননি।
বিভিন্ন সময় দুরের পথ পাড়ি দিয়ে আয়ুব আলীর কাছে আসলেও আজ না কাল করে সময় ক্ষেপন করে আসছেন। এরমধ্যে আয়ুব তাকে মাত্র ১০ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। সর্বশেষ বিষয়টি পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ মো: জিয়াউর রহমানকে জানালে তিনি আয়ুব আরীকে ডেকে পাঠান। শনিবার (৫ মার্চ) থানায় হাজির হয়ে বিষয়টি স্বীকার করে নগদ ১০ হাজার ও আগামী ৩ মাসের মধ্যে বাকি টাকা ফেরৎ দিবে বলে জানালে বিষয়টির মিমাংসা হয়।
এদিকে ১০ বছর পরে হলেও হৃত টাকা ফিরে পেয়ে মহান আল্লাহ ও থানা ওসির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মাছুরা খাতুন জানান, তার এখন আর কিছুই নেই। সর্বস্ব খুঁইয়ে গত ১০ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে তার জীবিকা। এসময় আল্লাহর কাছে ওসি জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেএ