আগামী দুই বছরের মধ্যে পাইকগাছাকে লবণমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু ।
তিনি মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা ও মাসিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এলাকাকে লবণমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন লবণ পানি উত্তোলন করে চিংড়ি চাষ করার ফলে একদিকে মাটির উর্বরাশক্তি মারাত্মক হ্রাস পেয়েছে। লবণাক্ততার কারণে কৃষি ফসল উৎপাদনও কমে গেছে। জীব-বৈচিত্র ধ্বংস হয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। প্রতিবছর নষ্ট হচ্ছে রাস্তা-ঘাট, বিল্ডিং বাড়ি সহ কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পদ। কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্যত্র। প্রাকৃতিক পরিবেশও আজ হুমকির মুখে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে অত্র এলাকায় মানুষের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। এজন্য এলাকাকে লবণ পানি মুক্ত করে মানুষের সুন্দর বসবাসের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এলাকা লবণ মুক্ত করতে পারলে প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বাভাবিক থাকবে, কৃষি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও কৃষি ভিত্তিক পরিবারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সুপেয় পানির সংকট থাকবে না। মানুষ হাঁস, মুরগী ও গবাদিপশু পালন করতে পারবে। দেশীয় প্রজাতির মাছ আবারও ফিরে আসবে। পুষ্টির কোন অভাব থাকবে না। মানুষ উন্নত জীবন-যাপন করবে। এ জন্য সবাই মিলে এলাকাকে লবণপানি মুক্ত করতে হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক দুটি সভায় বর্তমান সময় থেকে পৌরসভার অভ্যন্তরে কোন প্রকার লবণ পানি না উঠানো এবং ২০২২ সালের পর এলাকার কোথাও কোন লবণ পানি না উঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার হক, ওসি এজাজ শফী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার। সভায় ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ, প্রশাসনকে অবগত না করে মেলা, জন সমাগম, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকা, পাখির অভয়ারন্য সৃষ্টি, কোর্ট ও কৃষি অফিসের সামনে থেকে মটর সাইকেল ও নছিমন ষ্ট্যান্ড ব্রিজের ওপারে হস্তান্তর, চড়া সুদের কারবার বন্ধ, উপজেলার সীমান্তবর্তী মাদক প্রবেশের রুট বন্ধ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট করার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, শিববাটী ব্রিজকে ফকির আলম শাহ, বোয়ালিয়া ব্রিজকে বিজ্ঞানী পিসি রায় ও চাঁদআলী ব্রিজকে ভাষা সৈনিক শহীদ এমএ গফুরের নামে নামকরণ সহ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/ টি আই