বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারের ঈদ আনন্দের সবকিছুতেই যেন ভাটা পড়েছে। নেই অনাবিল আনন্দের আবহ আর খুশির জোয়ার। অদৃশ্য এক ভাইরাসে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এক কথায় বলতে গেলে, এবারও ঈদ উৎসব আনন্দ-খুশির ডালা সাজিয়ে নয়, এসেছে শঙ্কা-অনিশ্চয়তার বার্তা নিয়ে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই এবার পালিত হচ্ছে খুলনাসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর। করোনা সংক্রমণ এড়াতে মসজিদে জামাতে নামায আদায় করা হলেও সতর্কতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন ।
সতর্কতামূলক নির্দেশনার মধ্যে জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাযের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। এ সময় মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। ওযুর স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার / হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে। ওযুর সময়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। কাতার দাড়ানোর সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোন অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলানো যাবে না।
এছাড়া ঈদের অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্নে পালনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা ওয়াসার মাধ্যমে প্রধান জামাতের পাশে ওযুর পানির ব্যবস্থাসহ নগরীতে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ করা। কেএমপি ও র্্যাবের মাধ্যমে ঈদের জামাত নিরাপত্তা জোরদার করা। নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় যত্রতত্র গেট নির্মাণ, প্যানা বা ব্যানার টানানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। জামাতে মাস্ক পরে আসার ব্যাপারে ঈদের আগ থেকেই সকল মসজিদে মাইকিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদের সময় আতশবাজি, পটকা ফোটানো, রাস্তা বন্ধ করে স্টল নির্মাণ, উচ্চস্বরে মাইকড্রাম বাজানো, লাল রঙ্গের পানি ছিটানো এবং দ্রুতবেগে মটর সাইকেল চালানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন ফেরিঘাট, খেয়াঘাট পারাপারে যাত্রী হয়রানি বা অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হবে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে যানবাহন চলাচলের জন্য বলা হযেছে। ঈদের নামে আন্তঃ জেলা বাস, মিনিবাস চলাচলে বিধি নিষেধ দেয়া হয়েছে। তাৎক্ষনিক যে কোন দুর্ঘটনা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের। বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। ঈদের দিনে নগরীকে সৌন্দর্যমন্ডিত রাখার জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)।
খুলনা গেজেট/ এস আই