যশোরে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত চারটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাবেক এক চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের ক্ষমা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে তাদের ক্ষমার বিষয়টি জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে দলের স্বার্থ পরিপন্থি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তারা এ ক্ষমা পেয়েছেন।
ক্ষমা প্রাপ্তরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর তুহিন, মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও চাঁচড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম রেজা, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও রামনগর
ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে চেয়াম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও সহযোগিতা করার জন্য ওই ছয় নেতাকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর কেন্দ্র থেকে তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দলে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
ক্ষমা প্রাপ্তির চিঠিতে উলে-খ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের স্বার্থ আদর্শ শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি সম্পৃক্ততার জন্য ইতিপূর্বে ওই ছয়জনকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। এরপর তারা ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। দোষ স্বীকার করে তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাদের ক্ষমা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ জাতীয় সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ক্ষমা প্রাপ্তির বিষয়ে দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতি করে যেতে চাই। দলের আদর্শ নীতি মেনেই ভবিষ্যতে পথ চলবো। আমাকে ক্ষমা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ক্ষমা প্রাপ্ত অন্যরাও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ক্ষমা প্রাপ্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় নেতাকে ক্ষমা করা করা হয়েছে। তবে স্বপদে বহাল করা হয়নি। যশোরের কোন কোন নেতা এ ক্ষমা পেয়েছেন তার নির্দিষ্ট তথ্য এখনো জেলা আওয়ামী লীগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌঁছায়নি। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে দলের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠি পেয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।
যশোরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায়
অর্ধশতাধিক নেতাকে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয় ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ওইসময় বহিষ্কারের এ তথ্য জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/ বি এম এস