খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ইউটিউব দেখে আঙ্গুর চাষ, ভালো ফলনে কৃষক রুহুলের হাসি

মহিদুল ইসলাম, চৌগাছা

ইউটিউব দেখে নিজেই আঙ্গুর চাষ শুরু করেন যুবক রুহুল আমিন। দুই বছর আগে দশ কাটা জমিতে রোপন করা সেই গাছে এখন আঙ্গুরে ভরে উঠেছে। তিনি তার স্বপ্নকে আজ বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। ভালো ফলনে তার মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি মৌসুমে তিনি চল্লিশ মন আঙ্গুর বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন। সে চৌগাছা পৌর এলাকার বেলেমাঠ গ্রামের মঈনুদ্দিনের ছেলে।

রুহুল আমিন জানান, পাশ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলা থেকে ৩৬টি আঙ্গুরর চারা ৫০০ টাকা পিচ দরে ক্রয় করেছিলেন। আর এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে আরও দুইটি চারা ক্রয় করে ১০ কাটা জমিতে রোপন করেন। বর্তমানে তার প্রতিটি গাছে বাদুরের মত ঝুলছে আঙ্গুর। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে ৩৮টি গাছ থেকে এ বছর ৪০ মন আঙ্গুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

আঙ্গুর ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক রুহুল আমিন। এসময় তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, ধান, পাট, শাক-সবজি চাষে কৃষক লাভবান খুবই কম হয়ে থাকেন। তাই ভিন্ন কিছু চাষাবাদ করার ইচ্ছা পোষণ হতেই আজকের সাফল্য।

তিনি বলেন, নিজের কোন জায়গা জমি নেই, পরের নিকট থেকে লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বি হওয়ার চেষ্টা। প্রায় তিন বছর আগে আড়াই বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করে প্রথম ফলনে ১৪ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছি, ওই টাকায় কিছু জমি কিনেছি। এ বছর আরও আড়াই বিঘা জমিতে ড্রাগনের চাষ করেছি।

ড্রাগন আছে ৫ বিঘা, কুল চাষ করেছি এক বিঘা জমিতে আর সম্পূর্ণ নতুন চাষ হচ্ছে আঙ্গুর, ১০ কাটা জমিতে আঙ্গুর চাষ করেছি। টক বা মিষ্টি এমনটি ভাবছি না তবে জৈষ্ঠ্যমাসে আঙ্গুর পাকা শুরু হবে। তখন প্রতিটি আঙ্গুরই মিষ্টি হবে বলে তিনি মনে করছেন।

ফল চাষে সফল এই দরিদ্র কৃষক বলেন, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা বিশেষ করে সরকারী ব্যাংক হতে সহজ শর্তে লোন পেলে আমাদের মত দরিদ্র কৃষক কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য আনতে পারবে, এতে করে কৃষক নিজে লাভবান হবেন আর আর্থিক ভাবে দেশও এগিয়ে যাবে।

কৃষক রুহুল আমিন আরও বলেন, আঙ্গুর ফল যেহেতু আমদানি নির্ভর একটি ফল, তাই বছরের বার মাসই আমাদের আমদানিতে নির্ভর থাকতে হয়ে। দেশে আঙ্গুর চাষ হলে আমদানি কমবে লাভবান হবেন কৃষক। এরজেন্য কৃষি অফিসকে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি ১০ কাটা জমিতে আঙ্গুর চাষ করেছি সম্পূর্ণ ইউটিউব দেখে। প্রতিটি গাছ বপনের আগে অন্তত ৩ ফুট গভীর গর্ত করেছি, এরপর ওই গর্তে পাথর কুচি, বালি, ইটের গুড়া, জৈব সারসহ বেশ কিছু উপাদন দিয়ে চারা বপনের উপযোগী করে চারা লাগানো হয়। এর কারণে আমার চাষ করা আঙ্গুুর অপেক্ষাকৃত মিষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি অসংখ্য আঙ্গুরের চারা তৈরী শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে দুই হাজার চারা ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। বেশ কিছু চারার অগ্রীম অর্ডার আছে সব কিছু মিলিয়ে এই কৃষক ফল চাষে একজন সফল চাষি বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার মানুষ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন বলেন, চৌগাছা এলাকায় শখের বশে অনেকেই আঙ্গুর লাগান। তবে সম্প্রতি সময়ে বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু করেছেন। আমরা সর্বদা খোঁজ খবর রাখছি এবং কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে কৃষককে তাৎক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

খুলনা গেজেট/ এসজেড/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!