খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭ পৌষ, ১৪৩১ | ১১ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবালের অবসর ঘোষণা
  বছরের প্রথম দশ দিনে হাসপাতালে ৫২৮ ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু ৩

আশাশুনির হরিশখালী বেড়িবাঁধ সংস্কারের ৬ ঘন্টা পর ফের ভাঙ্গন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় বাঁধ সংস্কারের পর ৬ ঘন্টাও টিকেনি আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশখালি বেড়িবাঁধের ক্লোজার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সহস্রাধিক গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে হরিশখালি বেড়িবাঁধ আটকানো হয়। কিন্তু শ্রমিকরা বাঁধের কাজ অসম্পন্ন রেখে চলে যাওয়ায় সন্ধ্যার জোয়ারের পানির চাপে তা আবার ভেঙ্গে যায়।

বাঁধার কয়েক ঘন্টা পর ফের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। হরিশখালির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের ভাঙ্গন পয়েন্ট ক্লোজার ভেঙ্গে পূর্বের ন্যায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

স্থানীয় মিলন বিশ্বাস রুদ্র জানান, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন পাউবো’ সহযোগিতায় হরিশখালী ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় রিংবাঁধ দেওয়া শুরু করেন সপ্তাহ খানেক আগে। শুক্রবার বেলা ১টার দিকে রিংবাঁধ দেওয়া শেষ হলে সেখানে বাঁধের ওপর জুম্মার নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরে যান গ্রামবাসি। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টার দিকে জোয়ারে আবার বাঁধটি ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে প্রতাপনগর, মান্দারবাড়িয়া ও কল্যাণপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন।

হরিশখালী এলাকার বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন, রিংবাঁধ দেওয়ার পর আবার যখন সন্ধ্যায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করছিল, তখন মাইকিং করেও গ্রামের লোকজ কে বাঁধের কাছে আনা যায়নি। যে কারনে বাঁধটির ভাঙ্গন আটকানো সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সামাদ বলেন, চূড়ান্তভাবে বাঁধে বালুর বস্তা দেওয়ার পরে সেখানে ২০০ শ্রমিক রাখার অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। যদি সেখানে শ্রমিক রাখা হতো, তাহলে বাঁধ ভাঙ্গার সময় তা রক্ষা করা সম্ভব হতো।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বলেন, আম্পানের আঘাতে ভেঙ্গে যাওয়ার পর বাঁধটি সংষ্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ছিল। ঠিকাদার ও পাউবো কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ সংস্কার করায় আবার বাঁধটি ভেঙ্গে গেছে। তাছাড়া বাঁধটি অসম্পন্ন রেখে শ্রমিকরা চলে যাওয়ায় পরে আর তাদের ডেকে পাওয়া যায়নি। ফলে বাঁধটি ভেঙ্গে নতুন করে ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে ঠিকাদারে পক্ষে তদারকীর দায়িত্বে থাকা আফ্রিদি হোসেন বলেন, বাঁধটি বাঁধা প্রায় শেষ ঠিক তখনই শ্রমিকরা অসম্পন্ন রেখে চলে যায়। আর মাত্র ৩০ মিনিট কাজ করলে বাঁধটি ভাঙ্গতো না। কিন্তু শত অনুনয় করেও শ্রমিকদের রাখা যায়নি।

প্রতাপনগর এলাকার বেড়িবাঁধ তদারকের দায়িত্বে থাকা পাউবোর শাখা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে হরিশখালীতে ১১০ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ওই স্থানের পানি আটকাতে ৩১০ মিটার রিং বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে থেকে ২৫-২৬ মিটার আবার ভেঙ্গে গেছে। যেসব মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন, যদি তাঁরা আরও ৩০ মিনিট কাজ করতেন, তাহলে এই সমস্যা হতো না। বাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!