সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে।
এঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (৩৫) ও গোলাম রব্বানীর ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৮)।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান সমর্থক গ্র“পের কয়েকজন গদইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের সমর্থকরা ওই দোকানে উপস্থিত হলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে ওয়ায়েছ কুরনী, তুহিন, রফিকুল ইসলামসহ দু’পক্ষের কমপক্ষে ১০জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর দুর্বৃত্তরা হঠাৎ পুলিশের উপর বিনা উস্কানিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থল থেকে গোলাম কিবরিয়া ও মফিজুল নামে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এঘটনায় এসআই জাহাঙ্গীর ও ওসি’র গাড়ি চালক শরিফুল ইসলাম আহত হয়। তাদেরকে আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। গদাইপুর গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এদিকে সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করার ঘটনায় ২০ জনের নাম উলেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জনকে আসামি করে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের উপ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এই মামলা দায়ের করেন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাজরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে শাহ নেওয়াজ ডালিম সমর্থক গ্রুপ ও তার ফুপাতো ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুছ সমর্থক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে অসছে। এরই জের ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে প্রায়শঃ ঘের দখল, সংঘর্ষ, হত্যা, বাড়ি-ঘর ভাংচুর, হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেই থাকে। বেশ কিছুদিন আগে চেয়ারম্যান ডালিমের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে কুদ্দুছ গ্রুপের লোক শরবতকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম এখনো পলাতাক রয়েছে। এঘটনার পরও গদাইপুর গ্রামের উভয় গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খুলনা গেজেট / এমএম