আর মাত্র একদিন বাকি। কে হচ্ছেন সাতক্ষীরার পৌর পিতা। জেলাব্যাপি এনিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। প্রার্থীরাও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন শেষ মুহুর্ত্বের প্রচার প্ররারণায়। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে সাতক্ষীরা পৌর এলাকা। সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে মক ভোটিং। প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় মুখরিত গোটা সাতক্ষীরা পৌর এলাকা। সর্বস্তরে চলছে এখন ভোটের আলোচনা।
সাতক্ষীরা পৌর শহরের সব চেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় নাকাল হয়ে পড়েন পৌর সভার নিম্মাঞ্চলে বসবাসকারি সাধারণ মানুষ। প্রায় ছয়মাস জলাবদ্ধাতায় মানবেতর জীবন যাপন করেন এসব বাসিন্দারা। গত পাঁচ বছরে এই অভিশাপ থেকে পৌরবাসিকে মুক্তি দিতে পারেননি বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলররা। সাথে আছে ড্রেনেজ সমস্যা, সড়ক যোগাযোগ, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহসহ নানা সমস্যা। পৌরবাসি এসব অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। তাই এবার ভোটে তারা একটু হিসেব কসেই ভোট দিবেন। প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতে তারা আর ভুলতে চান না। এখনই সুযোগ যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার। কিন্তু কে নাগরিকদের এসব অধিকার ও দাবি ফিরিয়ে দিতে পারবেন সেটি নির্ধারণ করবে সাতক্ষীরা পৌরবাসী।
জানা যায়, বিগত ২০১৫ সালের সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন মোট ৭৯ হাজার ৬ হাজার ৩৪ জন ভোটারের মধ্যে ৫১ হাজার ৬২০ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচন বিএনপির প্রার্থী (ধানের শীষ প্রতীক) তাজকিন আহমেদ চিশতি ১৬ হাজার ৪৭০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল প্রতীক) প্রার্থী মোঃ আজহার হোসেন পেয়েছিলেন ১২ হাজার ৮৭৩ ভোট। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছিম ফারুক খান মিঠু ১২ হাজার ৫৩২ ভোট পেয়ে ৩য় অবস্থানে ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) নিয়ে মোঃ সাহাদাৎ হোসেন ৯ হাজার ৭২ ভোট পেয়েছিলেন।
এবার ২০২১ সালে সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ৮৯ হাজার ২২৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৩ হাজার ৪১৮ জন ও নারী ভোটার ৪৫ হাজার ৮০৬ জন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এসএম মুসতাফীজ উর রউফ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীকের নাছিম ফারুক খান মিঠু ও জগ প্রতীকে জামায়াত নেতা মোঃ নুরুল হুদা। এছাড়া সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১২ জন নারী ও সাধারন কাউন্সিলর পদে ৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা পৌর সভার সর্বত্রই এখন চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। আগামী পাঁচ বছরের জন্য কে হবেন পৌর পিতা, এনিয়ে হাট-বাজার, দোকান পাট, শপিংমল ও চায়ের স্টলসহ সর্বত্রই চলছে আলোচনা।
জাতীয় পার্টির কোন প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ সহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা এক হয়ে নৌকার পক্ষে জোরে শোরে কাজ করছেন। দিন রাত পরিশ্রম করছেন প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার জন্য। অপরদিকে দলের পক্ষে কাজ না করায় বিএনপির জেলা পর্যায়ের কয়েক নেতাকে বুধবার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দল না থাকলেও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রাণপন লড়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চেম্বার সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর ছদ্ধাবরণে নেতা কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন জামায়াত নেতা নুরুল হুদা। কোন রকমে মাঠে টিকে আছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এসএম মুসতাফীজ উর রউফ। শেষ মুহুর্ত্বে কে হাসবেন বিজয়ের হাসি তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধা অবদি।
খুলনা গেজেট/কেএম