এ বছরের শুরতেই খুলনায় ধান ও চালের বাজার অস্থিতিশীলতার মধ্যে। কখনও বাড়ছে, কখনও কমছে। বাজার অস্তিতিশীল থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বছরের দু’দফা ভারত থেকে চালের আমদানির অনুমতি দিলেও দাম কমছে না। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে খুলনায় চালের মূল্য বাড়ছে। মোটা চাল কেজি প্রতি কখনও ৪২ টাকা, কখনও ৪৫ টাকা, চিকন কখনও ৫৯ টাকা, আবার কখনও ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। খুলনায় ধান-চালের মূল্য উর্ধ্বগতি জানতে মন্ত্রণালয় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন শেষে ১১ আগস্টের সভায় প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
এ কমিটির সদস্যরা তথ্য উপস্থাপন করেন, ডুমুরিয়া ও লবণচরার মিলগুলোতে অস্বাভাবিক কোনো মজুদ নেই। নগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের লবণচরা এলাকার কাজী সোবহান অটো মিলের ২০ হাজার কেজি ধান ও ১৮ মেট্টিক টন চাল মজুদ দেখতে পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। বয়রা অটো রাইচ মিলে কোনো চাল মজুদ নেই বলে সভাকে অবহিত করা হয়।
বয়রা অটো রাইচ মিলের মালিক কমিটিকে জানান, দক্ষিণাঞ্চলে মোটা ধানের আবাদ কমে গেছে। আমন আবাদের জমিতে চিংড়ি, আবাসিক ভবন ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। ফলে এখানে কাংখিত ধান উৎপাদন হচ্ছে না। মহামারি করোনার কারণে পরিবহন সংকট দেখা দেয়ায় চালের মূল্য বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয় মিল মালিকরা কমিটিকে অবহিত করেন, আমন মৌসুমের প্রথম দিকে প্রতি মণ ধান ৮শ’ থেকে ৮শ’ ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও গেল মাসে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এই সূত্র বলেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় খুলনায় তিন জনকে ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে স্থানীয় লোয়ার যশোর রোডের ইয়ান ইন্টারন্যাশনাল, লবণচরা খাল পাড়ের কাজী সোবাহান ট্রেডিং কর্পোরেশন ও সাউথ সার্কুলার রোডের মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজ। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ভারত থেকে সিদ্ধ নন বাসমতি চাল ও আতপ চাল আনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তিনটি প্রতিষ্ঠান ৪২ হাজার মেট্টিক টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে।
নগরীর বাজারে ভারত থেকে আসা বঙ্গবন্ধু, বসুমতি ইত্যাদি নামের চাল পাইকারী ও খুচরা দোকানে মজুদ হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এ কমিটি আমদানির মাধ্যমে বাজারে পর্যাপ্ত চাল আনার সুপারিশ করেছে।
আজ পর্যন্ত খুলনার ১০টি সরকারি খাদ্য গুদামে ৬০ হাজার ৬শ’ ২৪ মেট্টিক টন আতপ, সিদ্ধ চাল মজুদ রয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে আনা চালের মধ্যে স্থানীয় বাজারগুলোতে সোমবার পর্যন্ত চালের মজুদ ৩১ হাজার ৪শ’ ১৯ মেট্টিক টন।
খুলনা গেজেট/এনএম