যশোরে বিএনপির কেন্দ্রীয় পদযাত্রা কর্মসূচিকালে ‘নাশকতার’ অভিযোগে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে ৯টি বোমা ও ককটেল উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৯১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চাঁদপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আমিনুল ইসলামের দায়ের করা মামলার আসামি হলেন ৪১ জন। এ মামলায় ৭ জনকে আটক দেখানো হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫টি ককটেল উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। এরা হলেন, সদর উপজেলার মন্ডলগাতী গ্রামের আবির হাসান শুভ, ফিরোজ শেখ, বাঁশবাড়িয়া গ্রামেরর আবু বক্কার সিদ্দিক, মাহিদিয়া গ্রামের এবিএম আসাদুজ্জামান, সাড়াপোল গ্রামের আবু হাসান কুদ্দুস, শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার আল মাসুদ রানা ও রুপদিয়ার পলাশ খান ।
এছাড়া পলাতক আসামিরা হলেন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী মৃত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম রেজা দুলু, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, আরএন রোড এলাকার সাগর, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, ফতেপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানপুর গ্রামের আঞ্জারুল হক খোকন, ফরহাদ, সীতারামপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম টুকু, মাহাবুবুর রহমান, এমএ জলিল, মহিউদ্দিন খান, ধানঘাটা গ্রামের আবুল হাশেম, বালিয়াডাঙ্গা ওসমান গণি, কামাল হোসেন, সোহরাব হোসেন, ওহিদুল ইসলাম দুলি, মাসুদুর রহমান, হাফিজুর রহমান, সুলতানপুর গ্রামের মহিউদ্দিন মধু, এহসানুল হক, চাঁদপাড়ার এলেন হোসেন, আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজাপুর গ্রামের ছবদুল হোসেন, ঝুমঝুমপুর গ্রামের ওবায়দুর রহমান, আজিম হোসেন বিশ্বাস, বাউলিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম, হামিদপুরের মঞ্জুরুল মাহমুদ লিটু, হাবিবুর রহমান লেন্টু, ভায়না গ্রামের মশিয়ার রহমান, গোলাম সরোয়ার লিটন, ফরিদুজ্জামান অপু, শহরের পূর্ববারান্দী মাঠপাড়ার মাসুদুল বারী ওরফে কাক্কু মিয়া ও মোল্লাপাড়া আমতলার শেখ মনিরুল কবির নান্নু (৫০)।
এসআই আমিনুল ইসলাম মামলায় বলেছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল পৌনে ৪টার দিকে গোপন সূত্রে জানতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে ইউনিয়ন পদযাত্রার নামে যশোর-নড়াইল সড়কের বাউলিয়া বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা, ইটপাটকেল, লোহার রড, বোমা নিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি ফোর্স নিয়ে সেখানে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে দিকবিদিক ছোটাছুটি করে। সে সময় উল্লেখিত সাতজনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি ককটেল, তিনটি কাঠের বাটাম, দুটি রড এবং চার টুকরো ইট জব্দ করা হয়।
এদিকে, তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচাজ এসাই একরামুল হুদার দায়ের করা মামলার আসামি সংখ্যা ৫০ জন। এ মামলায় আটক ৫ জনের কাছ থেকে ৪টি বোমা উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে।
আটককৃতরা ৫ জন হলেন, সদর উপজেলার মধু গ্রামের রুহিন হোসেন, ঘুরুলিয়া গ্রামের কুদ্দস হোসেন, বানিয়ারগাতি গ্রামের শফিয়ার রহমান, শেখহাটির বদিউজ্জামান, তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের আকরাম হোসেন। এছাড়া, পলাতক আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক উপশহর ডি ব্লকের মিজানুর রহমান, কিসমত নওয়াপাড়ার আনোয়ার হোসেন লাল্টু, রাজু আহম্মেদ, শেখহাটির আসাদুল ইসলাম ঝন্টু, কামরুল হাসান শিমুল, আলাউদ্দিন, আলতাফ হোসেন, বেনজির, আশরাফুল আলম সেলিম, আব্দুর রাজ্জাক, আরাফাত, ইকবাল, তালবাড়িয়ার কবির হোসেন, বাহারুল ইসলাম, পাঁচবাড়িয়ার মশিয়ার রহমান বাবলু, তালবাড়িয়া চিনেডাঙ্গাপাড়ার শামীম, ঘুরুলিয়ার আক্কাস, আশরাফুল ইসলাম, শামীম, আড়পাড়ার আমিনুর রহমান মধু, রাসেদুজ্জামান, দুলাল, ফারুক, ইকলাস, বড় গোপালপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, মধু গ্রামের মাহবুবুর রহমান, ছোট বালিয়াডাঙ্গার তোফাজ্জেল হোসেন, বাহাদুরপুরের রুহুল, বড় গোপালপুর গ্রামের কামরুল, সাইফুল ইসলাম, আলমনগর গ্রামের আশরাফুজ্জামান মিঠু, শহরের ষষ্টিতলাপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কবচর হুশতলার আব্দুর রউফ, নীলগঞ্জ তাতীপাড়ার শেখ ফেরদৌস ওয়াহিদ লিটন, শহরতলীর শেখহাটির মোস্তাফিজুর রহমান কবির, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ, শহরের পুরাতন কসবা পাওয়ার হাউজপাড়ার নূর আলম, শংকরপুর ইসহাক সড়কের আশরাফুল ইসলাম আশরাফ, তার ভাই আরিফ, সদর উপজেলার ইছালী পাঁচবাড়িয়া গ্রামের বজলুর রশিদ, কিসমত নওয়াপাড়ার সিরাজ, সমসপুর গ্রামের শান্টু, রুহুল কুদ্দুস, শাহাবুদ্দিন ও মুকুল ।
মামলায় এসআই একরামুল হুদা বলেছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে গোপন সূত্রে জানতে পারেন বিএনপির নেতাকর্মীরা ১০ দফা দাবিতে ইউনিয়ন পদযাত্রার নামে কিসমত নওয়াপাড়ার মোড়ে লাঠিসোটা, ইটপাটকেল, লোহার রড, বোমা নিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তিনি ফোর্স নিয়ে সেখানে গেলে আসামিরা ছোটাছুটি করতে থাকে। সেখান থেকে উল্লেখিত ৫ জনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪টি ককটেল, বাঁশের লাঠি, লোহার রড প্রভৃতি উদ্ধার করা হয়।