যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের পুলিন বিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠে অবৈধ পন্থায় গরু ছাগলের হাট বসানো হয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই গরু-ছাগলের হাট বসাতে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে ওই গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে অবৈধভাবে ফায়দা লুটছে একটি পক্ষ। অন্যদিকে ওই গরুর হাট ইজারা নিতে বেশকিছু দিন এলাকার দুইটি পক্ষ ব্যাপক দৌড় ঝাপ করে, কিন্তু উপজেলা থেকে একটি পক্ষ ইজারা পায় ব্যাপক অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সরকারি কিছু অসাধু ব্যক্তিদের যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে ওই হাট ইজারা অনুমোদন হয়েছে। ওই গরুর হাট ইজারা দেওয়া হয় স্থানীয় কলেজ মাঠে, কিন্তু অনুমোদিত স্থানে গরুর হাট না বসিয়ে হাট ইজারা গ্রহণকারী কতিপয় প্রভাবশালীদের ইন্ধনে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে পুলিন বিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গরুর হাট বসিয়েছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে স্থানীয়রা বেআইনিভাবে গরু-ছাগলের হাট অন্য স্থানে সরিয়ে নিয়ার দাবি করেছেন একাধিক ব্যক্তিরা।
তারা জানান, স্কুল কমিটির অনুমতি ছাড়া স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের অনুমতি ছাড়া অবৈধ পন্থায় গরুর হাট বসানো হয়েছে। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আমতলা বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, এলাকাবাসী ও স্কুল কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে কিছু না জানিয়ে এভাবে সরকারি স্কুলে গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে ফায়দা লুটে নিচ্ছে।
তিনি ক্ষোপের সাথে বলেন, দেশে কি আইন কানুন বলে কিছু নেই।
এ বিষয়ে সিদ্দিপাশা পুলিন বিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস মল্লিক বলেন, গরু-ছাগলের হাট স্কুল মাঠে বসানো বিষয়ে আমি কিছু জানি না, তাছাড়া এ ব্যাপারে কোন আবেদনও আমি পাইনি। স্কুল বন্ধ তাই আমি বাড়ি রয়েছি।
এ বিষয়ে পুলিন বিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ জাফর বলেন, স্কুল মাঠে গরু ছাগলের হাট বসানোর বিষয়ে তারা আমাদের থেকে কোন অনুমতি গ্রহণ করেনি এবং কোন আলোচনাও করেনি।
এ বিষয়ে আমতলা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আকরাম হোসেন বলেন, আমতলা হাট অনুমোদন হইছে আমার জানা মতে। কিন্তু জায়গার বিষয়ে যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। তবে তারা অন্য জাযগায় হাট বসাবে এখানে সমস্যার কিছু নেই।
এ বিষয়ে আমতলা ভূমি অফিসের নায়েব মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, আমাকে গরুর হাটের জায়গা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার নির্দেশ দিলে আমি প্রতিবেদন দিয়েছি। ইজারা গ্রহণকারীকে কলেজ মাঠে হাট ইজারার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই স্কুল মাঠে অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং যে জায়গা হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। সে জায়গা দাগ নম্বর উল্লেখ আছে, দাগ নম্বর আমার মনে নেই।
এ বিষয়ে গরুর হাট ইজারা গ্রহণকারী আহম্মদ বলেন, যে জায়গায় হাট বসানোর অনুমতি পেয়েছি। সেখানে হাট বসাতে পারিনি। গ্রামের বিষয় লোকে যেখানে গাছ গাছালি পাচ্ছে সেখানে গরু-ছাগল বেধে রাখছে সে গুলো আমি ঠেকাবো কি করে। তাই বাধ্য হয়ে স্কুল মাঠে গরুর হাট করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি এ উপজেলাতে সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি জেনেছি। আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। আপনাদের মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। পুলিন বিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠে গরু ছাগলের হাটের বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে খতিয়ে দেখতে বলেছি।
খুলনা গেজেট/এনএম