অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধ করার হাইকোর্ট নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। আইন আছে কিন্তু আইন ভাঙ্গার সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে। এটা পরিহার করতে হবে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ি দেশে মোট ৭ হাজার ৮৬টি ইটভাটা চালু আছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটায় বছরে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ইট তৈরি হচ্ছে। এসব ইটভাটার বছরে ১৩ কোটি মেট্রিক টন মাটি লাগে। যার অধিকাংশ আসছে কৃষিজমি থেকে। এতে করে এই উর্বর মাটির অভাবে কৃষক তার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ি ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হচ্ছে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রা খরচের পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে। এসব কথা বললেন জনউদ্যোগ খুলনার মানববন্ধনে বক্তারা।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় জনউদ্যোগের উদ্যোগে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পরিবেশ বিধ্বংশী ইটভাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগের যুগ্ম- আহবায়ক এড. মোমিনুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন পরিবেশ কর্মি এড. মামুনর রশীদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি শেখ মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহানগর কমিটির সাধারন সম্পাদক এড. নিত্যানন্দ ঢালী, জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি এড. মো: গাইসুল আজম, টিইউসি এর সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম চন্দন, পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ডা: সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু তাহের, গ্লোবাল এর আহবায়ক শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, পরিবর্তন খুলনার শিরিন পারভীন, ছায়াবৃক্ষের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম বাদশা, সম্মিলিত রাইটার্স ফোরামে নূরুন নাহার হীরা, শেখ আব্দুল হালিম, আইনুল হক, কবি সৈয়দ আলী হাকিম, ডুমুরিয়ার পলক কুমার মন্ডল, কৃষ্ণা দাস, এম এ সাদী, মো: রুহুল আমিন, ছাত্রনেতা জয় বৈদ্য, দুর্জয় হালদার, অন্তু মন্ডল, মীর মোমলেছ উদ্দিন, জীৎ বৈদ্য, জনউদ্যোগ এর সদস্য সাগর সরকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সারি সারি ইটভাটায় চিমনি দিয়ে নির্গত হচ্ছে দূষিত ধোঁয়া। দেশে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েও খুব বেশি সুফল মিলছে না; বরং অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলেও সেগুলো আবার চালু হয়ে গেছে। দেশে চালু অর্ধেকের বেশি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, চলছে ইটভাটা আইন অমান্য করে। এসব ইটভাটার কারণে ঘটছে বায়ুদূষণ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩-এ বলা হয়েছে, বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা করা যাবে না। কৃষিজমিতেও ইটভাটা অবৈধ। অথচ দেশের প্রায় শতভাগ ইটভাটা এই আইন মানছে না।
বক্তারা আরও বলেন, ইটভাটা শুধু উর্বর মাটি ধ্বংস করছে না; বায়ু, মাটি ও প্রকৃতির স্থায়ী ক্ষতি করছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীদের মালিকানা ও ছত্রচ্ছায়ায় এসব ইটভাটা চলছে। স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানের অন্যতম উৎস এলআর তহবিলের বড় উৎস এসব ইটভাটা। ফলে অবৈধ হলেও প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অধিকাংশ ইটভাটার কারণে কৃষিজমির ফসলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি আশপাশের বাসিন্দাদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/এনএম