আমাদের জীবনে সম্পর্কের প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই কোনও সম্পর্কে যাওয়ার আগে সঠিক সঙ্গী নির্বাচনের বিষয়ে সচেতন হতে হয়। ভুল সঙ্গীর সঙ্গে জীবন কাটালে মানসিক শান্তি হারাতে হতে পারে। সারাজীবন মানিয়ে নিয়েও কেটে যেতে পারে। আর সে কারণেই সঙ্গীর ৪টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ খেয়াল করতে বলেন মনোবিদরা। সাইকোলজি টুডের এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনি কি তার সঙ্গে খোলামেলা সব কথা বলতে পারেন?
একটি সুস্থ সম্পর্কের প্রথম শর্ত হলো মানসিক নিরাপত্তা যেখানে আপনি বিনা ভয়ে নিজের ভাবনা এমনকি দুর্বলতাও সঙ্গীকে বলতে পারেন। যদি আপনি প্রতিনিয়ত নিজের কথা গোপন রাখেন বা সেটা পরিবর্তন করে সঙ্গীকে বলতে হয় তাহলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন ‘আমি আসলে কিসের ভয় পাচ্ছি?
গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কেউ জানে তার সঙ্গী তার অনুভূতি বোঝে ও সাড়া দেবে, তখন সে খোলামেলা হতে পারে। এই বিশ্বাসের পরিবেশ সম্পর্ককে করে তোলে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী। যে সম্পর্ক আপনাকে নিজের মতো হতে দেয়, আপনাকে বিচার না করে বোঝে— সেটাই প্রকৃত ভালোবাসা।
সে কি সত্যিই বিনয়ী?
আপনার সঙ্গী শুধু আপনার সঙ্গে নয়, আশেপাশের মানুষদের সঙ্গেও কেমন আচরণ করে? রেস্টুরেন্টের ওয়েটার, ড্রাইভার, বন্ধুদের প্রতি তার ব্যবহার কেমন? এই বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ। যারা বিনয়ী মানুষ ভালোভাবেই জানেন কোথায় কেমন আচরণ করতে হবে। এমনকি কিছু ভুল হলেও সে খারাপ আচরণ করা থেকে বিরত থাকেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতি ঝগড়ার মধ্যেও একে অপরের প্রতি সৌজন্য বজায় রাখে, তাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়।
সুতরাং নিজেকে প্রশ্ন করুন সে পরিস্থিতি ভেদে আপনার সঙ্গে কেমন আচরণ করে। সে কি কঠিন সময়েও সহানুভূতিশীল? যদি জবাব হ্যাঁ হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি সঠিক মানুষের সঙ্গেই আছেন।
সঙ্গী কি আপনার ভেতরে লুকিয়ে থাকা স্বত্বা বিষয়ে সচেতন?
একটি সম্পর্কের মূল উদ্দেশ্য কেবল একসঙ্গে থাকা নয়। বরং একসঙ্গে থেকে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। নিজেদের বিকাশ ঘটানো। যদি আপনি তার সামনে নিজেকে ছোট মনে করেন, নিজের হাসি থামিয়ে রাখেন, বা নিজের স্বপ্নকে দূরে সরিয়ে দেন তাহলে হয়তো তিনি আপনার সঠিক মানুষ নন।
সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো আপনাকে বদলাতে চায় না, বরং আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মনোবিজ্ঞানে একে বলা হয় ‘মাইকেলেঞ্জেলো ইফেক্ট’ যেখানে সঠিক সঙ্গী আপনাকে গড়ে তোলে আপনার সেরা রূপে। এবার নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার সঙ্গী কি আপনার স্বত্বা বিকাশে পাশে থাকে। যদি উত্তর ইতিবাচক আসে তাহলে আর ভাবনা নেই।
আপনি কি তাকে ভবিষ্যতের অভিভাবক হিসেবে ভাবতে পারেন ?
সম্পর্কে থাকলে দুজন মানুষের নিজেদের বুঝতে পারা, দায়িত্ব ভাগ করে নেয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এমন আপনাদের সন্তান যদি নাও থাকে তার প্যারেন্টিং কেমন হবে সে বিষয়টা নিয়ে জাবাব জরুরি বলছেন মনোবিদরা। কারণ এই প্রশ্নের জবাবে প্রকাশ পাত তার দায়িত্বশীলতা এবং সহানুভূতিশীল আচরণ। একজন মানুষের সঙ্গে আপনার থাকতে ভালো লাগে মানেই কিন্তু সে সঠিক সিদ্ধান্ত বিষয়টা একেবারেই এমন নয়। বরং সঠিক সঙ্গী সঠিক সময়ে নিজের দায়িত্ব নিতে জানেন। সে সময়ের সঙ্গে জানেন আপনার সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, কীভাবে কথা বললে আপনার সেই পরিস্থিতিতে ভালো লাগবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যে মানুষ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন, পরিবারের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী তাকে সাধারণত বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়। কারণ এতে প্রতিফলিত হয় মানসিক পরিপক্বতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত। তাই ভাবুন তিনি কি এমন একজন, যার সঙ্গে আপনি নিরাপদ-বোধ করেন? যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে খুব সম্ভব, আপনি আপনার জন্য সঠিক মানুষটিকেই পেয়েছেন।
সঠিক সঙ্গী খুঁজে পেলে জীবন অনেকটা সহজ হয়ে যায়। সবসময় পরিস্থিতি এক থাকে না। তাই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে সঠিক সঙ্গীর পাশে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সে প্রতিনিয়ত পাশে থাকে।
খুলনা গেজেট/এএজে
								
    
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
                                        
