শনিবার । ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২

ব্রাজিলের কপ-৩০ সম্মেলনে অংশ নিবে সাতক্ষীরা উপকূলের শিশু নওশীন ও জিদান

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাতক্ষীরা প্রতি‌নি‌ধি

আগামী ১০-২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০। সাতক্ষীরা জেলা থেকে এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে উপকূলের শিশু নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান।

সারা পৃথিবীর প্রায় ১৫০ দেশের ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলের শিশুদের বাস্তবতা তুলে ধরবেন।

ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিতব্য কপ-৩০ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সাতক্ষীরার শিশু নওশীন ইসলাম আশাশুনি উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি। গত কয়েক বছর ধরে সে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছে।

নওশীন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম ও জেসমিন দম্পতির সন্তান ও প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, নুর আহমেদ জিদান জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের জি এম রইসউজ্জামান এবং মোছাঃ লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান ও সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

তারা দুইজন জাগ্রত যুব সংঘ (JJS), চিলড্রেন ফোরাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড DRR এবং KNH-BMZ-এর সহযোগিতায় এই বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।

কপ-৩০ এ অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে নওশীন ইসলাম বলেন, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশাকে তুলে ধরবো। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার যেন পায় সে জন্য উন্নত দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।

নওশীন আরও বলেন, বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে বলবো আমরা পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম, আমাদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া আপনাদের দায়িত্ব। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে আর আমরা শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্য বিয়ে বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।

নুর আহমেদ জিদান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবো। দাবি একটাই উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলগুলোর মাশুল আমাদের উপরে চাপিয়ে না দেয়। আমাদের শিশুদের ক্ষতিপূরণ দেয়।

নওশীন ইসলামের বাবা শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব মঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরা উপকূলের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা বলবে। আমি পিতা হিসেবে গর্বিত। তার জন্য দোয়া চাই।

এই দুই কিশোর-কিশোরীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, কপ-৩০ অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আগামী ১১ নভেম্বর তারা ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন