সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে নৌপথে হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রসূতি এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। সন্তান প্রসবের পর সমস্যা দেখা দেওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাবুরার সোরা দৃষ্টিনন্দন এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী হঠাৎ প্রসব বেদনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়িতে সন্তান প্রসবের পর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় স্বজনরা তাকে ট্রলারে করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার চেষ্টা করেন। নদীপথের দীর্ঘ যাত্রায় দেরি হওয়ায় ট্রলারের ভেতরই তার মৃত্যু হয়।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ফরিদা পারভিন বলেন, গাবুরায় কোনো মানসম্মত স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। সামান্য চিকিৎসার জন্যও নৌপথে অনেক দূর যেতে হয়। এ কারণেই প্রায়ই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, গাবুরা চারিদিক দিয়ে কপোতাক্ষ নদ এবং খোলপেটুয়া ও চৌদ্দরশী নদী দ্বারা বেষ্টিত সুন্দরবন ঘেষা একটি উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন। নদী পথ ব্যবহার করা ছাড়া এখান থেকে অন্য কোথাও যাওয়া খুবই অসম্ভব। ইউনিয়নে থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে চিকিৎসক না থাকায় এখান থেকে মানুষ কোন চিকিৎসা সেবা পায় না। ফলে কারো কোন অসুবিধা হলেই প্রথমে নদীপথ ব্যবহার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিতে হয়। ফলে দ্রুত স্বাস্থ্য সেবা না পাওয়ায় অনেকে পথেই মারা যায়। ফারুক হোসেনের স্ত্রীর ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে।
তিনি উপকূলীয় এলাকার সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ইউনিয়নের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে দ্রুত ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের দাবি জানান।
স্থানীয়রা জানান, নিরাপদ সড়ক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাঁরা দ্রুত চিকিৎসা অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম

