বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

দেবহাটায় লাবণ্যবতী খালের ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা ও দেবহাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী লাবণ্যবতী খালের উপর কাঠের ব্রিজটি চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে-কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাতে জীবনও বিপন্ন হতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে লাবণ্যবতী খালের উপর কাঠের ব্রিজটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে করে বিঘ্নিত হচ্ছে দুই উপজেলার ৬ ইউনিয়নের জনসাধারণের যাতায়াত ব্যবস্থা। স্থানীয় শ্রীরামপুর কলেজ, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, কুলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই কাঠের ব্রিজটি ব্যবহার করে। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

স্থানীয় বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ নুর ইসলাম জানান, “শুনেছি শ্রীরামপুর-কুলিয়া গ্রামকে একত্রিত করা কাঠের ব্রিজটি ঠিক করবে। কিন্তু সেটিতো ২০ বছর হয়ে গেল। এখনো ঠিক হলো না। আমি জানি না আমার জীবদ্দশায় ব্রিজটি ঠিক দেখে যেতে পারবো কি না? তবে আশায় আছি।”

তিনি আরও বলেন, “ব্রিজটি দিয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ স্কুল-কলেজে পড়াশুনারত শিক্ষার্থীরা পারাপার হয়। কিন্তু ব্রিজটি ভগ্ন ও ভেঙে পড়ায় তাদের যাতায়াত দারুণ ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।” ব্রিজটি নতুন ভাবে নির্মাণ করে জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থা নিরাপদ করার দাবি করেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, “দেবহাটা উপজেলার কুলিয়ায় বাড়ি হলেও আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে। আমার দিনরাত যে-কোনো সময় আসা-যাওয়ার একমাত্র পথ এই ব্রিজটি। কিন্তু সেটি জরাজীর্ণ ও ভঙ্গুর অবস্থায় আছে।” কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমনটি হয়েছে বলে তার দাবি।

শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমি ও আমার বন্ধুদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ব্রিজটি অনেক দিন হলো ভেঙে গেছে। এখনো কেউ ঠিক করে দেয়নি। আমরা একটা ভালো ব্রিজ চাই। তা না হলে আমরা সময়মতো স্কুলে আসতে পারবো না।”

স্থানীয় ভোমরা ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোঃ নেছার উল্লাহ বলেন, “ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন সময় ব্রিজটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তদারকির অভাবে ব্রিজটি আবারও ভেঙে পড়েছে। জরাজীর্ণ ব্রিজের দু’ধারে লোহার অ্যাংগেল দিয়ে জনগণের পথ আটকানো থাকলেও ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছে লাবণ্যবতী খালের দু’ধারের বাসিন্দারা।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা পরবর্তী নির্মিত ব্রিজটি সাতক্ষীরা সদর ও দেবহাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী মানুষের পারাপারের একমাত্র অবলম্বন। ২০০০ সালের বন্যায় ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আবারও সংস্কার করা হয়। তিনি দাবি করে বলেন, “লাবণ্যবতী খালের উপর নির্মিত কাঠের ব্রিজটি পুনরায় আধুনিক অবকাঠামো দিয়ে নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের পারাপারে অনেক উপকার হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন