সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ও মেয়েকে মারপিটের ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলা দত্তনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
থানায় মামলা দায়ের করার পর শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ গৃহবধূর স্বামী মোখলেসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী গৃহবধ মোছাঃ নাজমুন নাহার (৩৮) বলেন, প্রায় ১৮ বছর আগে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক কালীগঞ্জ উপজেলার দত্তনগর গ্রামের মোকলেসুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে এক মেয়ে ও এক ছেলে থাকলেও স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তি পাননি তিনি। বিয়ের পর থেকেই মোকলেসুর রহমান ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে ইতিমধ্যে বাবার বাড়ি থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার ও গৃহস্থালী সামগ্রী দিলেও নির্যাতন থামেনি। বরং শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৬৫), ননদ নিলুফা ইয়াসমিন (৩২) ও দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা মুক্তার (৩৭) এর প্ররোচনায় নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে শ্বশুরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দত্তনগরের বাড়িতে গেলে মোকলেসুর রহমান আবারও যৌতুক দাবি করেন। একপর্যায়ে স্বামী মোকলেসুর রহমান তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এক পর্যায়ে দা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর জখম হন। এসময় মাকে রক্ষা করতে মেয়ে সুরাইয়া মোকলেস ইশরা এগিয়ে এলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর বাবা মোহাম্মদ আলী তরফদার বলেন, আমার মেয়েকে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক কিছু দেওয়ার পরও সন্তুষ্ট হয়নি আসামিরা।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে