টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে গতকাল সোমবার থেকে জেলে বাওয়ালি ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে সুন্দরবন। প্রথম দিন সাতক্ষীরা বনবিভাগের চারটি স্টেশন থেকে জেলেদের জন্য ৬০০ পাশ ইস্যু করা হয়েছে। ফলে বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুমে টানা ৯০ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও জেলে সুন্দরবনের নদ-নদী ও খালে মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। একই সাথে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা।
সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি পাশ পেলেও সম্প্রতি সময়ে তৎপরতা বেড়ে যাওয়া জলদস্যুদের ভয়ে আতঙ্কিত জেলেরা। ফলে বাঘ-কুমির-বনদস্যুদের ভয় উপেক্ষা করে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েই বনে যাচ্ছে জেলে-বাওয়ালিরা। নিরাপদে মৎস্য আহরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সুন্দরবনে যাওয়া জেলে-বাওয়ালিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
পাশ নিয়ে সুন্দরবনে ঢোকার অপেক্ষায় থাকা জেলে রশিদুল জানান, আমরা সুন্দরবনে ঢোকার জন্য বনবিভাগের কাছ থেকে পাশ পেয়েছি। কিন্তু সুন্দরবনে একদিকে আছে বাঘ অন্যদিকে রয়েছে জলদস্যু। এদের ভয়ে আমরা কীভাবে সুন্দরবনে নিরাপদে মাছ ধরবো? সুন্দরবনে যাতে জেলে-বাওয়ালিরা নিরাপদে মাছ ধরতে পারে সে জন্য নিরাপত্তার জন্য তারা সরকারের কাছে আবেদন জানান।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা মুন্সিগঞ্জ জেলে পল্লির নেপাল মন্ডল (৫০) জানান, দীর্ঘ ৩৫ বছর সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সুন্দরবনে প্রবেশের উপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তিন মাস ধরে নদীতে মাছ ধরতে না পারায় এবং অন্য কোন পেশার সাথে যুক্ত না থাকায় সমিতির ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়েছে। তবু মাছ ধরতে সুন্দরবনে যাচ্ছি। আশা করছি আস্তে আস্তে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রাহমান জানান, দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার থেকে জেলে বাওয়ালিরা আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে মাছ-কাঁকড়া আহরণের জন্য পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করছে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশন থেকে প্রথম দিন প্রায় ৬০০ মত পাশ ইস্যু করা হয়েছে। সুন্দরবনে জেলে-বাওয়ালিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের বিশেষ টিম, টহল ফাঁড়ি ও স্টেশনগুলোর বনকর্মীরা নিয়মিতভাবে টহল দিচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম