বুধবার । ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ফুলতলায় মৎস্য ঘেরের নিরাপত্তাকর্মী হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

খুলনার ফুলতলায় মৎস্য ঘেরের নিরাপত্তাকর্মী কুদ্দুস শেখ হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪ ধারায় এ রায় প্রদান করা হয়।

এছাড়া পেনাল কোড ১৮৬০ এর ২০১ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। সেইসাথে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খুলনার সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ফুলতলা উপজেলার বেগুনবাড়ি পশ্চিম পাড়া এলাকার মাহবুব মোল্ল্যা (৩০) ও তার পিতা সিদ্দিক মোল্ল্যা (৫০) এবং বেগুনবাড়ি পূর্বপাড়া এলাকার আনছার মোড়লের ছেলে ইসরাইল মোড়ল (৩৫)।

আদালত সূত্রে জানা যায় কমা ২০১৪ সালের ১৫ মে রাতে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম শেখের চাচা কুদ্দুস শেখ মৎস্য ঘেরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই রাত ২ টার দিকে ঘরের পাশ দিয়ে টর্চ লাইট মেরে ঘোরাফেরা করছিলেন স্থানীয় মাহবুব মোল্লা, ইসরাইল মোড়ল ও সিদ্দিক মোল্লা। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কুদ্দুস শেখ তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়। পরেরদিন ১৬ মে সকালে বাদীর চাচা কুদ্দুস শেখ বিষয়টি ভাতিজা রফিকুল ইসলাম ও স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে জানায় এবং সালিশী ডাকার উদ্যোগ নিলে আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়। এরপর ১৭ মে সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ টার দিকে মামলার আসামি ইসরাইল ও মাহবুব মোল্লা তাদের মাঠের স্যালো মেশিন নষ্ট হয়েছে এমন কথা বলে কুদ্দুস শেখকে মেরামতের অনুরোধ জানান এবং মেরামত বাবদ তাকে মজুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কুদ্দুস শেখ সরল বিশ্বাসে ইসরাইল মাহবুব মোল্লার সাথে মেশিন মেরামতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তবে ওই রাতে তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরের দিন ১৮ মে সকালে বাদী রফিকুল ইসলামের ঘেরের অনুমান ৩০০ গজ পশ্চিমে সোহরবের ঘেরের মধ্যে চাচা কুদ্দুসের মৃতদেহের পাশে ফুলতলা থানা পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট করছে দেখেন বাদী রফিকুল ইসলাম। সেখানে থাকা পাশের ঘেরের পাহারাদার আজিজ মোল্লা বাদীকে জানায় বাদীর চাচা কুদ্দুস শেখ সেই রাতে ঘেরে আসেনি। এ ঘটনার আসামি মাহবুব মোল্লা, ইসরাইল ও সিদ্দিক মোল্লা সহ আরও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

কুদ্দুস শেখকে স্যালো মেশিন মেরামতের কথা বলে ১৭ মে সন্ধ্যা ৭ টায় ডেকে নেওয়ার পর থেকে ১৮ মে সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যবর্তী সময়ে বাদীর চাচাকে হত্যা করে সোহরবের ঘেরে ফেলে রাখা হয়। এ মামলায় আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তদন্তভার দেওয়া হয়। ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য আমলে গ্রহণ করেন খুলনার দায়রা জজ আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ সোমবার মামলার রায় প্রদান করা হয়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন