মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২
নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে ইলিশ ধরা মানুষগুলো

খুলনার প্রায় ৩ হাজার জেলের জন্য বরাদ্দ ৭৩.৪০ মেট্রিক টন চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এই সময়ে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। যা আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞায় ২২ দিনের জন্য কর্মহীন হয়ে পড়বেন খুলনার প্রায় ৩ হাজার জেলে।

প্রতি বছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেশের নদ-নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনায় নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। খুলনায় ইলিশ আহরণকারী ২ হাজার ৯৩৬ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। জেলেদের অভিযোগ, ভরা মৌসুমেও কাক্সিক্ষত ইলিশ না পাওয়ায় তারা দেনার দায়ে জর্জরিত। তার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বরাদ্দের চাল যেন দ্রুত বিতরণ করা হয়। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় এবার কঠোর অভিযান পরিচালিত হবে এবং কার্ডধারী প্রতিটি জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, খুলনার ২০টি নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ হয়। এরমধ্যে পশুর, শিবসা, ভদ্রা, ঢাকী, চুনকুড়ি, ঝপঝপিয়া, কাজীবাছা, শৈলমারী, গেংরাইল, হরি নদী, ভদ্রা নদী, দেলুটি, হাবরখানা, ভৈরব, রূপসা, আতাই, মজুদখালী, কপোতাক্ষ, কয়রা ও শেখের বাড়িয়া নদীতে জেলেরা ইলিশ আহরণ করেন। এসব নদীতে ৩ হাজার ৬০১ জন জেলে শুধু ইলিশ আহরণ করে থাকেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ বদরুজ্জামান বলেন, “খুলনার দিঘলিয়া, তেরখাদা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৩ হাজার ৬০১ জন ইলিশ আহরণকারী জেলে রয়েছে। তবে এবার ডুমুরিয়া বাদে বাকী ৬ উপজেলার ২ হাজার ৯৩৬ জন ইলিশ আহরণকারী জেলের জন্য বরাদ্দ এসেছে ৭৩.৪০ মেট্রিকটন ভিজিএফ (চাল)। ইলিশ আহরণকারী প্রতিটি জেলের জন্য ২৫ কেজি চাল বরাদ্দ রয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করার কথা রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন তারা মাছ ধরতে পারবে না। এই সময়ে আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।”

খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান এক দাপ্তরিক নির্দেশনায় উল্লেখ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঞ্জুরী করা ভিজিএফ (চাল) ইলিশের প্রধান মৌসুমে প্রজননক্ষম ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২০১৩ অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে উত্তোলন, বিতরণ/বণ্টন সম্পন্ন করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপ-বরাদ্দ প্রাপ্তির দুই কর্মদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে ডিও (ছাড়পত্র) প্রদান ও বিতরণ সূচি প্রদান করবেন। ভিজিএফ চাল বিতরণকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধি এবং ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কার্ডধারী জেলে ছাড়া অন্য কাউকে এ ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা যাবে না।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন