তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবুও খুলনায় সেই দামে কিনতে পারছে না ক্রেতারা। ১২ কেজির সিলিন্ডারে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত একশ’ টাকা পর্যন্ত, যা চাপ সৃষ্টি করছে ভোক্তাদের।
সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৭০ টাকা। সিলিন্ডারের বাড়তি দাম নেয়ার বিষয়ে বেশ কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছে খুলনা গেজেট। তাদেরই একজন রিকশা চালক আঃ রশিদ ব্যাপারী। তিনি সেপ্টেম্বর মাসের জন্য নির্ধারিত ১ হাজার ২৭০ টাকা মূল্যের ১২ কেজির সিলিন্ডার গ্যাস কিনেছেন এক হাজার ৩৪০ টাকায়। যা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৭০ টাকা বেশি। তবে কোন কোন দোকানে সিলিন্ডার প্রতি একশ’ টাকা বেশি দিতে দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
তিনি বলেন, এক এক দোকানে ভিন্ন দাম রাখা হচ্ছে। তবে আমরা সরকার নির্ধারিত দাম বুঝি না। দরকার হলে কিনি। দাম না কমলে আমাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ে। ভাড়ার রিকশা চালিয়ে কতই বা আয় হয়! গ্রামে হলে কাঠ-কুটো দিয়েও দু’সাজ রান্না করা যায়। কি করবো এটাতো শহর। দু’মুঠো খেতে হবে তাই জানি, দরদাম বুঝিনা।
সিলিন্ডারের দাম কেন সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি এ বিষয়ে ডিলাররা জানান, সরকার নির্ধারণ করে দিলেই তো সমাধান হয় না। ক্রয় মূল্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা খুচরা বিক্রেতাদের সিলিন্ডার সরবরাহ করে থাকি। তারাও সেইভাবে বিক্রি করে।
নগরীর টুটপাড়ার খুচরা বিক্রেতা মোঃ ইমন বলেন, “সরকারের নির্ধারিত দাম মানেনা বেক্সিমকো, বসুন্ধরা। কাস্টমারের সাথে ক্যাচাল করতে ভালো লাগে না, এজন্য পেট্রোম্যাক্স বিক্রি করি। এরা সরকার নির্ধারিত দামের নিচে বিক্রি করে। আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারি।”
নগরীর আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ সংলগ্ন আসাদ স্টোরে ১২ কেজি ওজনের বসুন্ধরা গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১৩৬০ টাকা। ওমেরা গ্যাস ১৩৫০ টাকা। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে সাউথ সেন্ট্রাল রোডের এম. এস এন্টারপ্রাইজে। এ দোকানে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস। দোকানের সামনে স্টিকারে লেখা রয়েছে, ‘সেপ্টেম্বর’ মাস ২০২৫, দাম ১২৭০/-। এখানে সরকারি নির্ধারিত নায্য মূল্যে ১২ কেজি এলপি গ্যাস বিক্রি করা হয়।
দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনার সহকারী পরিচালক মোঃ ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, “সরকার নির্ধারিত মূল্য দু’ একটি কোম্পানি মানে না। তবে একেবারে যে মানেনা এমন না। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। তারপরও খুলনা গেজেট যেহেতু নির্ধারিত মূল্যের বাইরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে, আমরা আবারও অভিযান পরিচালনা করবো।”
খুলনা গেজেট/এনএম