এবার দু’টি স্থাপনার নাম বদলের উদ্যোগ

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের একযুগেও নামকরণ কার্যকর হয়নি কেসিসির অনেক সড়কের

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের একযুগেও নতুন নামকরণ কার্যকর হয়নি কেসিসির অনেক সড়কের। এ অবস্থায় নতুন করে নগরীর দু’টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।

সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে রাষ্ট্রীয় অর্থে নির্মিত দু’টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। আওয়ামী লীগ জামানায় তৎকালীন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদ ইকবাল বিথারের নামে এ স্থাপনা দু’টির নামকরণ করা হয়। কর্পোরেশনের মাসিক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মন্ত্রণালয় ফ্যাসিস্টদের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নামের তথ্য চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে বার্তা পাঠায়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ ধরণের স্থাপনার নাম চেয়ে এ বছরের ২১ এপ্রিল কর্পোরেশনে চিঠি পাঠান। যার প্রেক্ষিতে নাম পরিবর্তনের জন্য কেসিসির মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শেরে বাংলা রোডে অবস্থিত ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে তালুকদার কমিউনিটি সেন্টারের নাম পরিবর্তন হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকায় শহিদ শেখ মোঃ সাকিব রায়হানের নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি নগরীর নবপল্লীর শেখ আজিজুর রহমানের পুত্র। বসুপাড়া কবরখানায় তার দাফন হয়। কর্পোরেশনের প্রশাসক মোঃ ফিরোজ সরকার এক সামাজিক অনুষ্ঠানে শহিদের নামে এ স্থাপনা নামকরণের কথা উল্লেখ করেন। চিফ প্লানিং অফিসার আবির উল জব্বারের ভাষ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৭ আগস্ট সাধারণ সভায় কাউন্সিলর বিথারের নামে নিরালার ১নং সড়কের প্রবেশ দ্বার হতে শেষ পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়। কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ২০০৯ সালে ৫ নভেম্বর নগরীর নিরালা ১নং সড়কের নামকরণের সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। ২০০৯ সালের ১২ ডিসেম্বর এলজিআরডি মন্ত্রাণালয় অনুমোদন দেয়। একই বছরের ১১ জুলাই মুসলমান পাড়ায় তিনি খুন হন। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। জীবদ্দশায় আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য ছিলেন। তিনি দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য অধ্যাপিকা রুনা রেজার স্বামী। কর্পোরেশনের মাসিক সভার সিদ্ধান্তে এ সড়কটির নাম পরিবর্তনের কথা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে।

এদিকে ডাকবাংলা থেকে সাতরাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কটি মন্ত্রণালয় ২০০৫ সালে ২৬ আগস্ট ড. মশিউর রহমান এর নামে নামকরণের অনুমোদন দেয়। তিনি শিশু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে অন্যতম। পূর্বের নাম ছিল সিমেট্রি রোড। মন্ত্রণালয় ১৯৯৮ সালে ৩০ জানুয়ারি সৈয়দ মোস্তা গাউছল হকের নামে সড়কের নামকরণ অনুমোদন দেয়। এর পরিধি সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজ থেকে কয়লাঘাট পর্যন্ত।

তিনি গর্বিত ভাষা সৈনিক। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের রাজস্ব মন্ত্রী ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। শেরে বাংলার নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক প্রজা পার্টির রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। পূর্বের নাম ছিল সাউথ সেন্ট্রাল রোড। ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হাজি মহসিন রোডের শহিদ স্কুল ছাত্র প্রদীপের নামানুসারে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নয়া নামকরণ করে। নামটি ছিল শহিদ প্রদীপ সড়ক। ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় শেখ আবু আহমেদের নামে সড়কের নামকরণের অনুমোদন দেয়। তিনি পাক শাসনামলে অধুনালুপ্ত নজরুল নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। মুসলিম লীগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। পূর্বের নাম ছিল হাজী ইসমাইল লিংক রোড। বসুপাড়া কবরখানা থেকে গল্লামারী পর্যন্ত এ সড়কের পরিধি। নয়া নাম কার্যকর হচ্ছে না। কেসিসির তাগিদও নেই।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন