কার্যকারিতা পরীক্ষায় ফেল করেছে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মশার ওষুুধ। সম্প্রতি মশকনিধনের জন্য নতুন কেনা হয়েছে এটা। গতকাল শনিবার সকালে কেসিসির গ্যারেজে ওই ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ছিটানোর পর একটি মশাও মারা যায়নি। তাৎক্ষণিক ওই ওষুধ ফেরত পাঠিয়েছে কেসিসি কর্তৃপক্ষ।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, ফগার মেশিন দিয়ে উড়ন্ত মশার নিধনের জন্য সম্প্রতি নতুন ওষুধ কিনেছে কেসিসি। দিনা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই ওষুধ সরবরাহ করে। ওষুধে কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য শনিবার সিটি করপোরেশনের যানবাহন গ্যারেজে কৃত্রিম মশক নিধনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ফগার মেশিন দিয়ে সাইপারমেথ্রিন ১০ ইসি মশার ওপর প্রয়োগ করা হয়। দেখা যায়, নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও একটি মশাও মারা যায়নি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনা এন্টারপ্রাইজের প্রধান নির্বাহী সরফুদ্দিন টিপু দাবি করেন, ‘আইসিডিডিআরবি পরীক্ষাগারে বদ্ধ ঘরে এই ওষুধ প্রয়োগ করলে ২০ মিনিটে ৯০ শতাংশ এবং ২৪ ঘণ্টায় শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।’ তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন-খোলা জায়গায় ব্যবহারের জন্য ওষুধের ক্ষেত্রে বদ্ধ ঘরের পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে প্রযোজ্য?
জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে ৫ লিটার ডিজেলের সঙ্গে ৩৫০ মিলি ওষুধ মেশানো হয়েছে। যদি দ্বিগুণ বা তিনগুণ মেশানো হয়, তাহলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে।’
উত্তর সন্তোষজনক না হওযায় কেসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আসিফ রহমান ওই ওষুধ ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘এই ওষুধ ফেরত নিয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন ওষুধ এনে পরীক্ষা করতে হবে। ওই ওষুধও যদি পরীক্ষায় ফেল করে তাহলে কার্যাদেশ বাতিল হবে।’
পরীক্ষার সময় উপস্থিত ছিলেন কেসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আসিফ রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কোহিনূর জাহান, ভেটেরিনারি সার্জন ড. পেরু গোপাল বিশ্বাস, কনজারভেন্সি অফিসার মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আবহাওয়া পরিবর্তনের মৌসুমে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মশার উৎপাতে একরকম অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন নগরবাসী। এর জন্য নিম্নমানের ওষুধকে দায়ী করা হচ্ছিলো। আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও মশার প্রজনন মৌসুম আসছে। ওই মৌসুমে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন কেনা হচ্ছে। নতুন কেনা ওষুধই গতকাল পরীক্ষা করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম