মঙ্গলবার । ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ । ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

খুলনায় শিক্ষা কর্মকর্তার মৃত্যু, আলোচনায় তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শামসুল হকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে একটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের বিষয়ে শামসুল হকের ওপর সাংবাদিক পরিচয়দানকারী চারজন ব্যক্তির চাপ প্রয়োগ ও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে (ব্রেন স্ট্রোক) আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার এ কে বি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের জুন মাসে আয়া পদে নিয়োগ পান বীথিকা রানী রায়। নিয়োগটি বিধি অনুযায়ী হয়নি বলে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন দেবাশীষ মণ্ডল ও অমিত মণ্ডল নামে দুই ব্যক্তি।

অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে গিয়ে দেখেন, অভিযোগকারীদের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে যথাসময়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারেননি।

রোববার ঈদের ছুটি কাটিয়ে প্রথম কর্মদিবসে অফিসে আসেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। অফিসে এসে তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য মতবিনিময় করেন। বেলা ১১ টার দিকে দুটি টিভি চ্যানেল ও স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকসহ চারজন জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল হকের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা তদন্ত রিপোর্টটি দ্রুত জমা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় ওই কক্ষে ওই চারজন ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। এর আগেও এই বিষয়ে কথা বলতে তারা ৩/৪ বার তার কাছে এসেছিলেন।

এক পর্যায়ে তিনি সহকর্মী পরিদর্শক বাবুল হাওলাদারকে কক্ষে ডাকেন। বাবুল কক্ষে প্রবেশ করতেই তিনি বলেন, দেখেন তো সাংবাদিকরা কী দাবি করছেন? এ কথা বলেই তিনি মাথা চেপে ধরে চেয়ারের ওপর ঢলে পড়েন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানতে চাইলে খুলনা জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা রমেন রায় বলেন, এর আগেও ওই তদন্তের বিষয়ে কথা বলতে ওই সাংবাদিকরা ৩/৪ বার স্যারের কাছে (শামসুল হক) এসেছিলেন। তারা প্রত্যেকবারই স্যারকে চাপ প্রয়োগ করতেন। এতে স্যার খুবই ভীত হয়ে পড়তেন। সেদিন তারা একই ধরনের ব্যবহার করলে স্যার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাদের ব্যবহার (সাংবাদিকদের) আমরা ভালোভাবে নেইনি। আমরা খুবই ক্ষুব্ধ।

খুলনা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমরাও অবগত হয়েছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার তদন্ত করছেন।

এ বিষয়ে খুলনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকজন শিক্ষকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি।

খুলনা গেজেটচ/হিমালয়/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন