শুক্রবার । ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ । ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
চলছে ৫ নদী খনন

সুখের স্বপ্ন বুনছে ভবদহের মানুষ

গাজী আবুল হোসেন, অভয়নগর

ভবদহের স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে শুরু হয়েছে ভবদহ অঞ্চলের ৫ টি নদীর ৮১.৫ কিলোমিটার খনন কাজ। গত ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ভবদহের ২১ ভেল্ট ভবদহ সুইচগেট থেকে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খনন কাজ করছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্পের আওতায় যশোর ও খুলনা অঞ্চলের হরিহর নদী ৩০ কিমি. হরি তেলিগাতী নদী ২০ কিমি. আপারভদ্রা নদী ১৮.৫ কিমি. টেকা নদী ৭ কিমি. ও শ্রী নদী ১ কিমি. সহ মোট ৫ টি নদীর খনন কাজ শুরু হয়।

সূত্র মতে, টেকা নদীর তলদেশ ৬৫ ফুট উপর অংশে ১৮ ফুট মোট ৭ কিলোমিটার, হরিনদীর তলদেশ ৮২ ফুট উপর অংশে ১০৪ ফুট মোট ১৫ কিলোমিটার, তেলিগাতী নদীর তলদেশ ৯৮ ফুট উপর অংশে ১৩১ ফুট মোট ৫ কিলোমিটার, আপার ভদ্রা নদীর তলদেশ ৪৯ ফুট মোট ১৮ কিলোমিটার, শ্রী নদীর তলদেশ ৩৯ ফুট উপর অংশে ৫৫ ফুট মোট ১ কিলোমিটার, হরিহর নদীর তলদেশ ৩৯ ফুট উপর অংশে ৫৫ ফুট মোট ৩৫ কিলোমিটার, সর্বমোট ৮১.৫ কিলোমিটার নদীর খননের কাজ চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরিবেশ বন ও পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বিভিন্ন দপ্তরের উপদেষ্টাদের সাথে নিয়ে দু’দফা ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করেন। ভবদহ অঞ্চলে এসে প্রতিশ্রুতি দেন স্থায়ী জলাবদ্ধতার সমাধানের। তারই ধারাবাহিকতায় জলাবদ্ধতার স্থায়ী সংকটের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর যশোর ও খুলনার ভবদহ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে বাপাউবো এবং সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ৪০ বছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার। এই জনপদে ভবদহ সুইট গেটটি একটি মরণফাঁদ।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, “জলাবদ্ধতা দূরীকরণে টিআরএম প্রকল্প গণআন্দোলনে গৃহীত হলেও বিগত সরকার ২০১২ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলার অজুহাতে প্রকল্প বাতিল করে দেয়। নদী খনন, টি আর এম চালু, সুইচগেট খোলা, আমডাঙ্গা খাল খনন করা এই চারটি দাবি ছিল। চারটি দাবি মেনে নিয়েছে পরিবেশ, বন ও পানিসম্পদ উপদেষ্টা।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রনজিত বাওয়ালি বলেন, “এবার যেহেতু সেনাবাহিনীর অধীনে নদী খনন বাস্তবায়ন হচ্ছে এ কারণে একটু আশার আলো দেখছেন ভুক্তভোগীরা।”

সরেজমিনে দেখা যায়, ১৮ টি স্কেভেটর দিয়ে নদী খনন কাজ চলছে। ভবদহ সুইচ গেটের উজানে ও বাটিতে এ কাজ চলমান রয়েছে। পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতারা বলছেন, “নদী খননের পাশাপাশি বিলে টি আর এম চালু করতে পারলে দীর্ঘ মেয়াদি জলাবদ্ধতার সমাধান আসবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন