রবিবার । ২৩শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

নিরাপত্তাহীনতায় পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ

গাজী আবুল হোসেন, নওয়াপাড়া

যশোরের নওয়াপাড়া নদী বন্দরে নোঙর করা কার্গো জাহাজগুলোতে চুরি ও ছিনতাইয় উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বন্দর এলাকা মাদকসেবীদের আড্ডাখানা গড়ে ওঠায় নৌপথের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি যেন পরিণত হয়েছে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে। প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে নোঙর করা জাহাজের স্টাফদের।

ভুক্তভোগীরা জানান, নৌ পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় বন্দর এলাকায় অপরাধচক্র দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রতিদিন শতাধিক জাহাজ নোঙর করে নওয়াপাড়া নদী বন্দরে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সার, গম, ভুট্টা, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়ে এখান থেকে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরেই চলছে মাদকসেবী চক্রের নৈরাজ্য। সম্প্রতি নওয়াপাড়া পরশঘাটে নোঙর করা ‘জান্নাত-৯’ জাহাজে কেবিন খুলে দিতে চাপ দেয় অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক। জাহাজ স্টাফ সেলিম ও লিমন রাজি না হলে তাদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিবাদ করলে খুলে নেয়া হয় জাহাজ বেধে রাখার দামি রশি। বিষয়টি নৌ পুলিশকে জানালেও তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। পরে ঘাটের লেবার সরদার মনিরুজ্জামান মানিক বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

জাহাজ শ্রমিকদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই মাদকসেবীরা জাহাজে উঠে কেবিন দখল করে মাদক সেবনসহ অসামাজিক কর্মকা-ে লিপ্ত হয়। প্রতিবাদ করলে মারধর, ছিনতাই ও ভয়ভীতি প্রদর্শন নিত্যদিনের ঘটনা। অনেক শ্রমিক ভয় ও প্রতিশোধের আশঙ্কায় মুখ খুলতে সাহস পান না। চুরি ছিনতাই ও নিরাপত্তা সংকট বাড়তে থাকায় বন্দর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে দিন দিন।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নওয়াপাড়া শাখার সভাপতি হাসান মুন্সি বলেন, “অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য চলতেই থাকলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নদী বন্দর কীভাবে নিরাপদ থাকবে। আমরা বারবার নৌ পুলিশকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেই।”

এ বিষয়ে নওয়াপাড়া নৌবন্দরের উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ জানান, “জাহাজে মাদকসেবীদের আড্ডা ও শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুরি ছিনতাইয়ের ব্যাপারে প্রশাসনকে বারবার বলেছি। নৌযান শ্রমিকদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সতর্ক হওয়ার শরামর্শ দিয়েছি।”

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওয়াপাড়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিত কুমার সেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা নিয়মিত টহল দিয়ে থাকি। অভিযোগ পেলেই আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আর কোনো অভিযোগ থাকলে জানাবেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন