বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

লাঠিচার্জের পর সংসদ ভবন এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ- সেনাবা‌হিনী

গেজেট প্রতিবেদন

প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির পর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানস্থল থেকে বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধাদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ ও সেনাবা‌হিনী। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে শুরু হওয়া এই অভিযানের পর পুরো সংসদ ভবন এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সকালে ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ জুলাই যোদ্ধারা। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদে তাদের ভূমিকা ও ত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, বরং সনদটি আইনি ভিত্তিহীন ও অবমূল্যায়নমূলকভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। রাত থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থান নেওয়া শত শত আন্দোলনকারী সকাল গড়াতেই প্রবেশের চেষ্টা করেন মূল ভবনের দিকে। কেউ কেউ গ্রিল টপকে সামনে এগিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত মূল ফটক খুলে দেয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীরা এবং পাঁচ শতাধিক বিক্ষুব্ধ যোদ্ধা অনুষ্ঠানস্থলের মূল মঞ্চ ও অতিথিদের জন্য নির্ধারিত স্থানে বসে পড়েন।

দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সনদের অঙ্গীকারনামায় সংশোধন আনা হবে।’ তবে তার এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারেননি উপস্থিত আন্দোলনকারীরা। তারা ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলকে মঞ্চে স্থান দেওয়ার দাবি জানান এবং সনদের আইনি স্বীকৃতি ও কার্যকর বাস্তবায়নের রোডম্যাপ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মঞ্চের চারপাশে অবস্থান নেয়। পরে দুপুর একটা নাগাদ পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে, যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি পুলিশ।

লাঠিচার্জের পর সংসদ ভবন এলাকা কার্যত ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্লাজার আশপাশের রাস্তা ও প্রবেশপথে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দুপুর দেড়টার মধ্যে এলাকা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।

উল্লেখ্য, জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল। তাদের দাবি, আন্দোলনের রক্তের ঋণ ও ত্যাগের মর্যাদা রক্ষা করতে হলে সনদে আইনি স্বীকৃতি, তদন্ত কমিশন গঠন এবং নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলেই শুক্রবারের এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন