বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই নিম্নচাপটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। এর প্রভাবে দেশের অন্তত ১৪ জেলার বিভিন্ন স্থানে ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে, এছাড়া উপকূলীয় জেলা গুলিতে বৃষ্টিপাত বাড়বে।
এর আগে শুক্রবার (২৫ জুলাই) আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকাল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার কাছে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম শেষ করতে পারে। এরপর এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ০৩ (তিন) নম্বর (পুনঃ) ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এসএস