শুক্রবার । ৩রা অক্টোবর, ২০২৫ । ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩২

রিফাত হত্যা মামলা : অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ জনকে বি‌ভিন্ন মেয়াদে সাজা, খালাস ৩

গেজেট ডেস্ক

রিফাত হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন আসামির মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছে আদালত। একই সাথে এ মামলায় খালাস দেয়া হয়েছে ৩ জনকে। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ছয় আসামির ১০ বছর, চার জনের ৫ বছর এবং একজনের ৩ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার সময় জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে জেলা শিশু আদালতে এ রায় পড়া শুরু করেন বিচারক মো. হাফিজুর রহমান।

রায় উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনা কারাগারে থাকা এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আদালতে হাজির হন এ মামলায় জামিনে থাকা ৮ আসামি। রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ৭ আসামি। গত ১৪ অক্টোবর আসামিদের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায়ের দিন মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ধার্য করেন।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা দায়রা ও জজ মো. আছাদুজ্জামান। ১০ আসামির মধ্যে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনায় পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন এ মামলার প্রধান সাক্ষী।

এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ১ সেপ্টেম্বর মামলায় ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়। প্রথম ভাগে সম্পন্ন হয় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচার। দ্বিতীয় ভাগে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিচার শুরু হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের রায় দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। ওই দিন রায়ে মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হয়। চারজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ছয় আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)। খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সাইমুন (২১)।

রায়ের আগে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। আর মো. মুসা হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন। যদিও মামলার প্রধান আসামি মো. সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়নবন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। শিশু আদালতের মামলায় মোট ৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন