বুধবার । ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ডুমুরিয়ায় শিক্ষার্থীদের অনলাইন ডেটাবেজ তৈরীতে ভোগান্তি

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবিষয়ক তথ্য ডেটাবেইজে সংরক্ষণ করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বে ও বাবা-মায়ের অনলাইন জন্মনিবন্ধন করাতে হচ্ছে। এতে সময় যেমন বেশি লাগছে তেমনি খরচও হচ্ছে বেশি। তবে এই প্রক্রিয়াটি স্থগিত রয়েছে জানিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে সবার তথ্য সংরক্ষণ করা গেলে আগামীতে এই ডেটাবেজ থেকে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সব তথ্য সহজে পাওয়া যাবে।

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবছরের এপ্রিল মাস থেকে শিক্ষার্থীদের মৌলিক তথ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর আওতায় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের তথ্য ভিক্তিক ডেটাবেইজ তৈরী এবং ইউনিক আইডি প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তা যুক্ত করা হচ্ছে সফটওয়্যারে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া নিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে অভিভাবকদের। দেশের অন্য অনেক জায়গার মতো খুলনাতেও এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অভিভাবকদের।

তারা জানান, প্রক্রিয়াটা শুরু হয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। সেখান থেকে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করে সেটি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হয়। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই তথ্য যুক্ত করে সার্ভারে সংরক্ষণ করে। কিন্তু অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করতে হচ্ছে। বাড়ছে ভোগান্তি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দিনের পর দিন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ঘুরতে হয়। গুণতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ফি থেকে বেশি টাকা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্র অথবা ছাত্রী তার জন্মনিবন্ধন অনলাইন করতে পিতামাতা সহ মোট তিনজনের নিবন্ধন অনলাইন করতে হচ্ছে। যার মোট ব্যয় প্রায় ৫০০/ ১০০০ টাকা । এই টাকা হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে বহন করা কষ্টসাধ্য। এক দিকে স্কুলের বিভিন্ন ফি দিতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবার গুলো অন্যদিকে অনলাইনে নিবন্ধনের চাপ। একই সাথে শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের সনদ এমবিবিএস ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত হতে যাবে যেটা সংগ্রহেও অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে ভক্তভোগী একাধিক অভিভাবক দাবি জানান, যেহেতু আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তাতেই তো সকল তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে। তাহলে আবার জন্মনিবন্ধন কেন লাগবে।

খর্নিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন জানান, প্রচুর ভীড় থাকায় অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে দেরি হচ্ছে। অনলাইন জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে তাদের বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধনও করতে হচ্ছে।

ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিমাংশু কুমার বিশ্বাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, অনেকের জন্মনিবন্ধন সনদ নেই। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদেও সংরক্ষিত নেই। আইডি কার্ড অনুযায়ী নতুন জন্মনিবন্ধন করে দিতে হচ্ছে। তাহলে এই জন্মনিবন্ধন সনদের কি প্রয়োজন?

ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার রুহুল আমিন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ইউআইডি নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। যদিও সেই স্থগিতাদেশের কার্যকারিতা দেখা যায়নি স্কুল কিংবা ইউনিয়ন পরিষদে। বরং সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই অভিভাবকরা ছুটছেন সন্তানের ইউআইডি আর নিজেদের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ করাতে। পোহাচ্ছেন ভোগান্তি।

প্রসঙ্গতঃ খুলনা জেলায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪২০টি, মাদ্রাসা রয়েছে ১২৬টি এবং কলেজ রয়েছে ৭৫টি। শিক্ষার্থীর সংখ্য প্রায় আড়াই লাখ।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন