জমিজমা বিরোধের জের ধরে খুন হয় বটিয়াঘাটা উপজেলার মোক্তাদির (৫৫)। এ হত্যার অভিযোগে চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই খুলনা পুলিশ পরিদর্শক একেএম মাহফুজুল হক। মঙ্গলবার (৮ জুন) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১ এর বিচারক মোঃ মনিরুজ্জামানের আদালতে তিনি এ চার্জশীট দাখিল করেন।
চার্জশীটভুক্ত আসামিরা হলো, নাজিরঘাট মেইন রোডের মৃত মোঃ আলী হাওলাদারের ছেলে রবিউল ইসলাম রবি, বটিয়াঘাটা উপজেলার বোনারাবাদ গ্রামের ইউনুস আলী মোল্লার ছেলে সেলিম মোল্লা, নাজিরঘাট তাবলিগ মসজিদ এলাকার মৃত হাজী আব্দুল খায়ের শেখের ছেলে মোঃ আমিনুল ইসলাম ও দিঘলিয়া উপজেলার মোঃ মোসলেম শেখের ছেলে মোঃ শাহাজাহান শেখ (পলাতক)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাতটায় চৌকিদার দেব কুমার দাশ হাঁটতে বের হন। বটিয়াঘাটা উপজেলার দাউলিয়াফাদ গ্রামের বড় ব্রীজের উত্তর পাশে ভরা দু’টি চটের বস্তা দেখেন। কৌতুহলবশত একটিতে লাউ ও অপরটিতে মস্তকবিহীন লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে প্রশাসন লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। ওইদিন চৌকিদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা দায়ের করেন। লাশটির পরিচয় নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তিন দিন ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় ফলাও করে প্রতিবেদন করা হয়। তারপরে ভিকটিমের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি বটিয়াঘাটা এলাকার শেখ আবুল বাশারের ছেলে মোক্তাদির। মস্তকবিহীন লাশের খুনীদের হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে পুলিশ। ফেব্রুয়ারি মাসে এ হত্যার রহস্য বের হয়ে আসে। টাকা ও জমিজমা নিয়ে তার নিকট আত্মীয়রা তাকে খুন করে।
তদন্ত কর্মকর্ত জানান, ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার ফুপাতো ভাই রবি তাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যার পর সবুজ পল্লী ময়ূর নদীর তীরে নিয়ে যায়। এর আগে কাপড়ের ব্যাগে দড়ি ও গুরু জবাই করা ছুরি নিয়ে অপর তিন আসামি ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করতে থাকে। ভিকটিমকে নেওয়া মাত্র মাটির ওপর ফেলে দিয়ে দড়ি দিয়ে তার সমস্ত শরীর বাঁধা হয়। পরে সেলিম মোল্লা বুকের ওপর বসে ছুরি দিয়ে জবাই করে ভিকটিমের মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ভ্যানযোগে একটি বস্তায় আসামিরা লাউ ও অপরটিতে মস্তকবিহীন লাশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ফেলে আসে। যা সেলিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছে।
পরে অপর আসামিদের দেখানো মতে ভিকটিমের মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এ মামলার পলাতক আসামি মোঃ শাহাজাহান শেখকে এখনও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে। ভিকটিমের কাছে সেলিম মোল্লা দেড় লাখ টাকা ও তার সাথে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই