“আমার দু’টি নিষ্পাপ সন্তান রয়েছে। আমি তাদের কাছে কিভাবে মুখ দেখাবো? এ ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আমার ওপর যে পাশবিক নির্যাতন হয়েছে তা যেন অন্য কোনো নারীর সাথে না হয়।” কথাগুলো বলেছিলেন খুলনায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পুলিশ (সাময়িক বরখাস্ত) কর্তৃক ধর্ষণের শিকার নারী।
তার বর্ণনা অনুযায়ী, ঘটনা ১৩ মে। সময় আনুমানিক রাত ১২ টা, স্থান পিটিআই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। কর্তব্যরত এএসআই (সাময়িক বরখাস্ত) মোকলেছুর রহমান সেন্টারের নিচতলা হতে দোতলায় কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরত ঐ নারীর (২২) কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে।
তিনি বলেন, আমার মুখ চেপে ধরায় ঘুম ভেঙ্গে যায়, হঠাৎ করেই সজাগ হয়ে যাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধর্ষক মোকলেছুর রহমান আমার মুখ বেঁধে ফেলে। এ সময় আর কাউকে ডাকতে পারিনি। এরপরে সে আমাকে পাশবিক নির্যাতন করে চলে যায়। আমার সারা শরীরে যন্ত্রনায় কাতর হয়ে পড়ি, এ সময় কক্ষের দরজা খোলা ছিল। এরপরে সে ফের ফজরের আজানের পূর্ব মুহুর্তে আমার রুমে প্রবেশ করে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করে। পাশের রুমে কেউ টের পেয়েছিল কিনা, এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার একেবারে কাছের রুমে এক বৃদ্ধা থাকতেন। তিনিও ধর্ষণের বিষয়টি জানেন।
তিনি আরো বলেন, আমি লোকলজ্জার ভয়ে প্রথমদিন কাউকে কিছু না জানালে দ্বিতীয় দিন ফের রাতে এসে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরপরে তাকে আমি বলি, ‘তোর চাকুরি খেয়ে ফেলব।’ পরে আমি পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই।
এরপরে ধর্ষণের শিকার ঐ নারী বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৭। রোববার (১৬ মে) এএসআই মোকলেছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরের দিন সোমবার সদর থানা পুলিশ বরখাস্তকৃত এএসআইকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।
উল্লেখ্য, ৪ মে মঙ্গলবার ভারত থেকে ভিকটিমসহ ১৪ জন নারী আসেন। তারা সবাই খুলনা পিটিআইতে কোয়রেন্টাইনে ছিলেন। এদের মধ্যে ১২ জনের কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন হওয়ায় বুধবার ছাড়পত্র নিয়ে তারা বাড়ি চলে যান।