খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

চাষি থেকে ভোক্তা : তরমুজের মূল্য বেড়ে হয় দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশাখের খরতাপ। সেই সঙ্গে পবিত্র রমজান মাস। আর এই খরতাপে একটু স্বস্তির জন্য মানুষ মৌসুমি ফল তরমুজ খেতে চায়। চাষি থেকে ভোক্তা পর্যায়ে হাত বদলে তরমুজের মূল্য বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এ নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে ক্ষুব্ধভাব থাকলেও একটু স্বস্তি পেতে চড়া মূল্যে কিনতে হচ্ছে তরমুজ।

বর্তমানে খুলনার বিভিন্ন বাজারে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। সপ্তাহখানেক আগেও তরমুজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। অবশ্য কৃষকরা বলছেন, আগের চেয়ে এখন তরমুজের দাম কিছুটা কমেছে।

তবে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সাইজ ভেদে তরমুজের দাম ভোক্তা পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কেজি দরে বেশি মূল্যে তরমুজ বিক্রির অপরাধে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেছে প্রশাসন। তবে খুলনায় মনিটরিং ও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা।

বাজার ঘুরে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে দুই ধরনের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। ৬ কেজির নিচে মাঝারি আকারের তরমুজের দাম হাঁকা হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, আর ৬ কেজির ওপরের তরমুজের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি।

খুলনা পাইকারি বাজারে ৪ থেকে ৬ কেজি ওজনের তরমুজ ১০০ পিস বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকায়। সেই হিসেবে তরমুজের পিস পড়ে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। অথচ খুচরা পর্যায়ে সেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২৭০ টাকার বেশি দামে।

এ ছাড়া ৪ থেকে ৯/১০ কেজির ১০০ পিস তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে তরমুজের পিস পড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। সেই তরমুজ ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৪৫০ টাকার বেশি। এক্ষেত্রে তুলনামূলক বড় সাইজের একটি তরমুজ দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

ডুমুরিয়ার তরমুজ চাষি পবিত্র ঢালী বলেন, খেতে এবার তরমুজ ভালো হয়েছে। ৪ কেজি থেকে ৯ কেজি ওজনের তরমুজ তুলে বিক্রি করেছি। ১০০ পিস তরমুজ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১৭ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি। প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ছে ১৫৫ থেকে ১৭০ টাকা।

খুলনার কদমতলা ফলের আড়তের খন্দকার ভান্ডারের ম্যানেজার মিরাজ বলেন, ৪ থেকে ৬ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকা দরে। সাইজ ভেদে তার দাম ১৪ হাজার টাকাও হচ্ছে। তবে বড় সাইজের তরমুজ ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে সব তরমুজই পিস হিসেবে বিক্রি হয়। কৃষকরা মাঠ থেকে তরমুজ নিয়ে এখানে এসে ক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করে বিক্রি করে।

আড়ত থেকে মো. হারুন নামে এক ব্যবসায়ী ১২ হাজার টাকা দরে ৫৯০ পিস তরমুজ কিনেছেন। আড়তদার ও শ্রমিক খরচ মিলে দাম পড়েছে ৭৯ হাজার ৮০ টাকা। এখানে ৪ থেকে ৬ কেজির বেশি ওজনের প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়েছে ১১৪ টাকা পিস। এর সঙ্গে যাতায়াত খরচ মিলে দাম পড়বে ১১৮ টাকা থেকে ১২০ টাকা পিস।

নগরীর খালিশপুরের খুচরা ফল বিক্রেতা চুন্নু মিয়া বলেন, পিস এবং কেজি দু’ভাবেই তরমুজ বিক্রি করে থাকি। পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করলে ক্রেতাদের দামে পোষায় না। যে কারণে ক্রেতারাই কেজি দরে কিনতে আগ্রহী হয়। সেক্ষেত্রে কি করবো। মাল তো বিক্রি করতেই হবে। তাই কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করি।

তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল ১৪ হাজার টাকা দরে ৪৮৩ পিস তরমুজ কিনেছি। দাম পড়েছে ৬৭ হাজার ৬২০ টাকা। এর সঙ্গে আড়তদার এবং শ্রমিক খরচ মিলে পড়েছে ৭৫ হাজার ৩৮২ টাকা। তার সঙ্গে পণ্য পরিবহন ভাড়া যুক্ত হবে। সব মিলে দাম পড়েছে ১৬০ টাকা পিস। এখন ৩ কেজি সাইজের একটি তরমুজ বিক্রি করলে লোকসান হচ্ছে। তিন কেজি বিক্রি করলে আসে ১২০ টাকা। আর বড় ৬ কেজি সাইজের বিক্রি করলে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা হয়। অনেক সময় তরমুজ নষ্ট হয়ে যায়। ছোট-বড় মিলিয়ে পুষিয়ে নিতে হয়।

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক বলেন, বাজার ঘুরে দেখেছি। অনেকেই পিস এবং কেজি দু’ভাবেই বিক্রি করছে। যারা কেজি দরে বিক্রি করছেন তারা কেজি দরে কিনেছেন বলে জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টা যাচাই-বাছাই করছি।

খুলনা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, বাজার তদারকি করা হয়েছে। সেখানে কেজি এবং পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তবে যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!