খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
  সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার

কয়রায় নদীর বাঁধ চুঁইয়ে পানি প্রবেশ, আতঙ্কে জনপদ (ভিডিও)

তরিকুল ইসলাম ও নিতিশ সানা, কয়রা

খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া থেকে হোগলা পর্যন্ত কপোতাক্ষ নদীর ভেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট-বড় ছিদ্র দিয়ে লোনা পানি প্রবেশ করেছে। প্রায় ৩ কিমি বাঁধের অধিকাংশ জায়গা রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। ফলে আম্ফানের ক্ষত শুকিয়ে উঠার আগেই পুনরায় যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে ডুবে যেতে পারে এলাকার মানুষের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা, মৎস্য ঘের, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এলাকার হাজারো মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে গত বছরের মে মাসে আম্ফানের আঘাতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হয়ে দশালিয়ার বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। দীর্ঘ ১১ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে যথেষ্ট সরকারি বরাদ্দ হলেও টেকসই বাঁধ তৈরিতে গড়িমাসি করছে একটি মহল।

স্থানীয় সূত্রে ও সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, কয়রার দশহালিয়া থেকে হোগলা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি রাস্তা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরের জোয়ারে পানিতে বাঁধের বিভিন্নস্থান দিয়ে চুকিয়ে ও ছোট-বড় ছিদ্র দিয়ে নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। কয়েকজনকে পানি বন্ধের জন্য তাৎক্ষণিক কাজ করতে দেখা গেছে। যারা কাজ করছে তাদের নদীর অপর পাশে মৎস্য ঘের রয়েছে। মৎস্য ঘেরে নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি উঠানো হচ্ছে। ফলে ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

স্থানীয় মৎস্য চাষী মতিয়ার রহমানকে বাঁধে কাজ করতে দেখা যায়। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বাঁধ নিয়ে চিন্তিত। যে কোন মূহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে নদী ও তার ঘের একাকার হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বাঁধ ভাঙ্গলে কয়েকটি গ্রাম পানিতে ভেসে যাবে।
আরেক মৎস্য চাষী নাসির জানান, গত বছর আম্ফানে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় তার দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনও সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি লিচ (হারি) নিয়ে ঘের (মৎস্য চাষ) করেন। এবার ভেঙ্গে গেলে তার চরম ক্ষতিতে পড়তে হবে।

ভিডিও দেখুন-

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, বাঁধ মেরামতে সরকারি বরাদ্দ হয়েছে। তবুও কাজ করতে গড়িমাসি করায় আজ এ অবস্থা! আবারো যে কোন মূহুর্তে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউল আবেদীন বলেন, পানি প্রবেশের সংবাদ শুনেছি। তাৎক্ষনিক পানি বন্ধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি কোন সমস্যা হবেনা। এছাড়া ১৪ ফুট রাস্তা চওড়া করে ৪৮০ মিটার রাস্তার কাজও চলমান রয়েছে। অপরদিকে জাইকার অর্থায়নে হোগলা থেকে এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ করা হবে।

উল্লেখ্য, উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ গেল বছরের এপ্রিল মাসে জোয়ারের পানি বাড়ায় উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। খবর পেয়েই স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে পারলেও মে মাসের আম্ফানে শেষ রক্ষা করতে পারেন নি। আম্ফানে বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। এর আগে ২০০৯ সালে আইলার সময়ও ওই এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে লোনা পানিতে চরম ক্ষতি হয়।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!