পাল্লেকেলে টেস্টে অন্তত ড্র করতে হলে উইকেটে টিকে থাকার ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে ধৈর্যের বদলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দেখাচ্ছেন তাড়াহুড়ো। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই আউট হয়ে ফিরে গেছেন সাইফ হোসেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানো নাজমুল শান্তও ফিরেছেন শূন্য রানে। দলীয় ২৭ রান তুলতেই জোড়া উইকেট হারিয়েছে মুমিনুল হকের দল। অবশ্য এই দিক থেকে কিছুটা আগ্রাসীভাবে খেলছেন তামিম ইকবাল। এরই মধ্যে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাঁর ব্যাটে লড়াই করছে বাংলাদেশ।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ দুই উইকেটে ৫৩ রান। এখনও ৫৪ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী বাংলাদেশ।
এদিকে নিজেদের লক্ষ্যে দারুণভাবে সফল শ্রীলঙ্কা। দুই সেঞ্চুরিয়ান পাহাড় সমান ইনিংস দাঁড় করানোর পর ১০৭ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকেরা। লিড নিয়েই আজ রোববার লাঞ্চ বিরতির পর বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে লঙ্কানরা। তাঁদের লক্ষ্য দ্রুত বাংলাদেশকে অলআউট করা। অন্যদিকে, বাংলাদেশের লক্ষ্য ড্রয়ের আশায় উইকেটে টিকে থাকা।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আট উইকেটে ৬৪৮ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা। আজ পঞ্চম দিন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিমুথ ডি করুনারত্নের ম্যারাথন জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। দুজনের উইকেটই তুলে নেন তিনি। সঙ্গে উইকেটের দেখা পেয়েছেন এবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। একটি রানআউট হয়েছে। ২৪৪ রানে থেমেছেন করুনারত্নে। ১৬৬ রানে সাজঘরে ফিরেছেন ডি সিলভা
গতকাল শনিবার চতুর্থদিন তিন উইকেটে ৫১২ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। তিন উইকেটে ২২৯ রানে কাল দিন শুরু করে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ঘণ্টায় কোনো সুবিধাই তৈরি করতে পারেননি সফরকারী বোলাররা। বরং আগের দিন ৮৫ রানে অপরাজিত থাকা দিমুথ করুনারত্নে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ২৪৭ বলে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
ওই সেঞ্চুরিকেই দিনের শেষ সেশনে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দেন লঙ্কান ওপেনার। ৩৮৭ বল খেলে ২১ চারে ডাবল সেঞ্চুরির ঘর স্পর্শ করেন করুনারত্নে। যদিও ডাবল সেঞ্চুরির বলটি মোকাবিলা করার সময়েই আউট হতে পারতেন তিনি। তাসকিনের বলে কাট করতে গিয়ে তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নিতে পারতেন কিপার লিটন। কিন্তু সেটা আর হলো না। বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। করুনারত্নেও পৌঁছে যান দ্বিশতকের ঘরে।
পুরো দিনে করুনারত্নের সঙ্গে দারুণভাবে ব্যাট করেছেন ধনঞ্জয়াও। এই জুটিতে নিজেদের লক্ষ্যে ছুটছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু আজ আর সেটা সম্ভব হয়নি। আলোর স্বল্পতার কারণে দিনের ২২ ওভারে খেলা বাকি থাকতেই শেষ হয় চতুর্থ দিন।
এর আগে গতকাল স্কোরবোর্ডে ৫৪১ রানের বিশাল রান নিয়েই ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কাও যে তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে সেটা কে জানত! ব্যাটিংয়ে নেমেই দারুণ প্রতিরোধ গড়ছেন লঙ্কান ব্যাটাসম্যানেরা।
বাংলাদেশি পেসারদের পাত্তা না দিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে যান দুই ওপেনার। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন মিরাজ। থিরিমান্নেকে এলবির ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠিয়েছেন এই অফ স্পিনার। ১২৫ বলে আট বাউন্ডারিতে ৫৮ রানে থেমেছেন লঙ্কান ওপেনার।
মিরাজের পর স্বাগতিকদের দ্বিতীয় উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ফার্নান্দোকে ২০ রানে আউট করেছেন তিনি। এরপর শেষ বিকেলে আরেকটু স্বস্তি এনে দেন তাইজুল। শ্রীলঙ্কা শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানলেন তিনি। টিকতে দিলেন না অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে। ৩২ বলে ২৫ রান করা ম্যাথিউসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। তিন উইকেট হারানোর পর ডি সিলভাকে নিয়ে দিনের বাকি অংশ পার করেন করুনারত্নে।
খুলনা গেজেট/এনএম