অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। আজ শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্ট থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসার ছাত্ররা।
এর আগে আজ বিকেলে রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হকের অবস্থানের খবর পেয়ে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হয়। এ ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেন কয়েকজন ব্যক্তি। ওই লাইভ দেখে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসার শত শত ছাত্র ওই রিসোর্ট গিয়ে মামুনুল হককে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বের হয়ে এসে মামুনুল হক জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় কিছু লোক মাওলানা মামুনুল হককে রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে অবরুদ্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ সময় মামুনুল হক তাদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে আসেন। স্ত্রীর নাম আমেনা তৈয়বা। শরিয়ত অনুযায়ী তিনি দুই বছর আগে আমেনাকে বিয়ে করেন। এ বিষয়ে তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে।
ফেসবুক ভিডিওতে দেখা যায়, মামুনুল হক প্রশ্নের জবাবে বলছেন, ‘আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, উনি আমার স্ত্রী। আমি শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ করেছি। আমি সব ধরনের প্রমাণ দেব। আমি কোনো দুর্বলতা নিয়ে এখানে আসি নাই। আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে রিফ্রেশমেন্টের জন্য এখানে বেড়াতে এসেছি। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের লোকবল আমাকে হেনস্তা করেছে।’
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ‘আজ (শনিবার) দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে যাই। জাদুঘর ঘুরে দেখে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এখানে (রিসোর্টে) আসি। আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম। … এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। আপনারা দেখেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে শনিবার রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মামুনুল হকের ভাগ্নে রাজধানীর জামিয়া রহমানিয়ার শিক্ষক মাওলানা এহসানুল হক বলেন, ‘শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের পরিবারের সদস্যরা আজ নির্বাক, স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ। আমরা মজলুম ইয়া আল্লাহ। একজন আলেম তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে গেলেও দুশমনদের হাতে এভাবে হেনস্তা হতে হবে? ইয়া আল্লাহ, তুমি আমাদের পরিবারের ওপর রহম করো। আমার সম্মানিত মামাকে হেফাজত করো। একজন আলিমের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে আমাদের কলিজা ছিঁড়ে দিলো ওরা। যারা এমন হয়রানি করলো তাদের বিচার চাই। তুমি সব দেখছো আল্লাহ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। নিরাপত্তার জন্য তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন এলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/কেএম