খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিলো তুরস্ক

খুলনা অঞ্চ‌লের খামারীরা করোনার প্রণোদনা পাবেন এক থেকে আট হাজার টাকা!

 কাজী মোতাহার রহমান

কোভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ পোল্ট্রি ও ডেইরী ফার্মের খুলনা উপকূলের খামারীরা প্রণোদনা পাচ্ছেন এক থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খুলনা উপকূলের ১০ জেলায় ৭০ হাজার ১৬১ জন খামারী এ প্রণোদনা পাবেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত করোনা মহামারীর কারণে জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। ফুলতলা, ডুমুরিয়া, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড, কালিগঞ্জ যশোরের অভয়নগর, শার্শা, বাগেরহাটের ফকিরহাট, মোংলা, রামপাল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটা, কলারোয়া ও কালিগঞ্জ উপজেলার ডেইরী ফার্মের মালিকরা প্রতি লিটার গরুর দুধ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। সাত মাসের মধ্যে ছোট বড় খামার গুলোতে গড়ে এক লাখ টাকা করে লোকশান হয়। মুরগীর ডিম প্রতি পিচ পাঁচ টাকা, একদিন বয়সী সোনালী, কক ও বয়লার মুরগীর বাচ্চা পাঁচ টাকা এবং বয়লার মাংস প্রতি কেজি নব্বাই টাকা দরে বিক্রি হয়। খামারীদের উৎপাদন খরচ উঠেনি। ফলে খামারীরা ঋণী হয়ে পড়েন। খুলনা উপকূলের ১০ শতাংশ খামারী মালিক পুঁজি হারিয়ে ফেলেছেন।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের হিসেব মতে এক লাখেরও বেশী পোল্ট্রি ও গবাদী পশুর খামারী উৎপাদনে রয়েছে। তার মধ্যে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর ৭০ হাজার ১৬১জন খামারীকে প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রণোদনা পাবেন তালিকাভুক্ত খামারীদের মধ্যে খুলনা জেলায় ৭ হাজার ২০২ জন, বাগেরহাট জেলায় ৯ হাজার ৬১ জন, সাতক্ষীরা জেলায় ১০ হাজার ২৩৪ জন, যশোর জেলায় ৮ হাজার ৭৭১ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ১২ হাজার ৬৪৬ জন, মাগুরা জেলায় ৭ হাজার ১৬৪ জন, নড়াইল জেলায় ১ হাজার ৮৫১জন, কুষ্টিয়া জেলায় ৮ হাজার ৭ জন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৩ হাজার ৫৩১ জন, মেহেরপুর জেলায় ১ হাজার ৬৯৪ জন।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ শাহবুদ্দিন আহমেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের পরিচয়পত্র ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রজেক্টে পাঠানো হয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাবেন।

প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ডেইরী ও পোল্ট্রি ফার্মগুলোকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পোল্ট্রি ও ডেইরী খামারের মালিকরা এক হাজার টাকা থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত প্রণোদনা পাবেন। ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আনন্দ কুমার অধিকারী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলার একুশ হাজার খামারীদের মধ্যে ১২ হাজার ৬৪৬ জন খামারী প্রণোদনার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রণোদনা পাবেন। করোনাকালীন হরিণাকুন্ড, কালিগঞ্জ, শৈলকূপা ও জেলা সদরের খামারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

খুলনার দাকোপ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার রায় জানান, আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ এ উপজেলার ২ হাজার ৬০০ খামারীর মধ্যে ৩৯৬ জনকে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা বানিশান্তা, কৈলাশগঞ্জ, লাউডোব, তিলডাঙ্গা, সুতারখালী, কামারখোলা, পানখালী ও পৌর এলাকার খামারীরা করোনাকালীন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার বাজুয়া গ্রামে রমা মন্ডলের মুরগীর খামারে বদহজম রোগে কয়েকটি মুরগী মারা গেছে। বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের খলিসাবুনিয়া গ্রামের মুরগীর খামার স্বপন রায় জানান, ৫ শ’ মুরগী গত বছরের জানুয়ারি মাসে ডিম দিয়েছে। লোকসানের কারণে ২২৫ পিচ বিক্রি করতে হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। সরকারি পর্যায়ে ১ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রণোদনায় ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব হবে না। খামারগুলো পুণর্বাসন করা সম্ভব হবে না।

পোল্ট্রি খামার বাঁচাতে গত ১৯ ডিসেম্বর পোল্ট্রি ফিসফিড শিল্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মূখপাত্র এস এম সোহরাব হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!