পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিলে ‘বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আল্লাহ আকবর ও আল্লাহ সর্বশক্তিমানসহ পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ছিড়ে মাটিতে পড়ে থাকা অংশগুলো সংগ্রহ করেন হোসনে আরা (৪০)। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এ কাজ করে আসছেন তিনি।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর শহরের চুনিয়াখালী মহল্লার ফুটপাতের কাপড় ব্যবসায়ী গোলাম মাওলার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম। নিঃসন্তান এই দম্পত্তি দীর্ঘদিন পৌর এলাকার আবু সাঈদের বাড়িতে বাসা বাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সাল থেকে আবর্জনা, ড্রেন, নর্দমা, খানাখন্দ ও মাটিতে পড়ে থাকা পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল থেকে আল্লাহর নাম লেখা ও পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের অংশ ছিড়ে সংরক্ষণ করেন হোসনে আরা। পরে সেগুলো নদীতে ফেলে দেন।
ড্রেন ও আবর্জনা থেকে এগুলো সংগ্রহ করার একটি ভিডিও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন বোরকা পরিহিত নারী আবর্জনা এবং ড্রেন থেকে কিছু সংগ্রহ করছেন।
ড্রেন থেকে কী সংগ্রহ করছেন জানতে চাইলে হোসনেরা পোস্টার থেকে ছিড়ে নেওয়া ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ লেখাটি দেখান।
তিনি বলেন, ‘মাটিতে পড়ে এসব আয়াত ও আল্লাহ্ তাআলার নামের অবমাননা হচ্ছে। এগুলো দেখে আমার কষ্ট হয়। সেজন্য আমি শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে এগুলো সংগ্রহ করি। পরে নদীতে ফেলে দেই। প্রায় ২০ বছর ধরে এ কাজ করছি।’
হোসনে আরা জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি পারিবারিকভাবে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। মাটিতে পড়ে থাকা পোস্টারে বা অন্যান্য কাগজে আল্লাহর নাম ও পবিত্র কুরআনের আয়াত দেখে কষ্ট অনুভব করতেন। এক সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন এগুলো তার চোখে পড়লে তিনি তা সংরক্ষণ করবেন। সেই শুরু। এরপর থেকে প্রতিদিন নিজেই রাস্তায় ঘুরে ঘুরে এগুলো সংরক্ষণ করেন তিনি।
হোসনে আরা বলেন, ‘আমার জীবনের একটি ইচ্ছা। সেটা হলো- পবিত্র হজ পালন ও নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করা।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি দেখে শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর বাজারে সবুজ বিপ্লবের উদ্যোক্তা যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান হিরকের আয়োজনে হোসনে আরা ও জনদুর্ভোগ নিয়ে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম