খুলনার ‘চুকনগর মডেল মহিলা কলেজ’ এমপিওভুক্ত করার জন্য নেওয়া ঘুষের ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় দু’বছর পর খুলনা-৫ আসনের সাংসদ এবং ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে উদ্ধার হয়েছে। কলেজের সাবেক সভাপতি, ডুমুরিয়া উপজেলার ৫নং আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং একই ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ কুমার রায় সম্প্রতি কলেজ এমপিওভুক্ত করার জন্য ঘুষের জন্য নেওয়া ১৫ লাখ ৯০হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এদিকে প্রতাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত বুধবার খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নিকট লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।অভিযোগে তাকে জনপ্রতিনিধি ও দলীয় পদ থেকে বহিস্কারের দাবি জানানো হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ এম আর মঈন জানান, ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কলেজ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন প্রতাপ কুমার। এসময় তিনি কলেজটি এমপিওভুক্ত করার জন্য প্রভাষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিকট থেকে ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে তিনি সভাপতির পদ থেকে সরে গিয়ে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। বিষয়টি বর্তমান কলেজ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদকে জানানো হয়। পরবর্তীতে খুলনা-৫ আসনের সাংসদ ও কলেজ সভাপতিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্যোগে গত ১৯ জুলাই প্রতাপ রায়ের নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। কলেজ সভাপতি গত ২০ জুলাই কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিকট ১০ লাখ টাকা বন্টন করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও কলেজের বর্তমান সভাপতি এজাজ আহম্মেদ বলেন, কলেজ এমপিওভুক্ত করার জন্য কিছু টাকা সাবেক সভাপতির নিকট ছিল। স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগর নেতাদের সহযোগিতায় টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা দেওয়ার জন্য সাবেক সভাপতি আরও কিছুদিন সময় চেয়েছেন।
আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান ও কলেজের সাবেক সভাপতি প্রতাপ কুমার রায় বলেন, কলেজের খাত-বর্হিভুত বিভিন্ন ফান্ড সাংসদ সদস্যের নির্দেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল খোকন ও আবু সালেহের সহযোগিতায় ইউএনএ’র মাধ্যমে কলেজ কমিটিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি এমপিওভুক্ত করার টাকা নয়। আমার রাজনৈতিক শত্রæতার প্রতিপক্ষরা বিষয়টি অতিরঞ্জিত করছে। এটি বিভিন্ন স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচার করেছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহানাজ হোসেন জানান, প্রতাপ রায়ের বিষয় একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। এটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে জানানো হবে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। সভাপতির নির্দেশক্রমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক অভিযোগ পত্রে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৫নং আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বহিস্কারের দাবিতে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, কলেজের এমপিওভুক্ত করার জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি। তবে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ জমা দিলে সেটা আমি পেয়ে যাব। সারাদিন বাইরে থাকায় অফিসের কাগজপত্র সব দেখা হয় না।
খুলনা গেজেট / এনআইআর