বুধবার । ২৬শে নভেম্বর, ২০২৫ । ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

টেকসই বাঁধের জন্য রাস্তায় আশাশুনিবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধি

জলবায়ুু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরায় প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ ঘটে। জলবায়ুু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত মার্চের শেষে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশ খালি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ১১ গ্রাম প্লাবিত হয়। ভাঙনে জোয়ারের পানি ঢুকে খোল পেটুয়া নদীর সাথে একাকার হয়ে যায় গ্রামগুলো। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের ঈদ উৎসব মাটিতে মিশে যায়।

বারবার নদীভাঙনের কারণে অনেক পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়ে শহরের বিভিন্ন বস্তি ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। এ সকল স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর জীবিকা, আশ্রয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও স্থানচ্যুত মানুষের সুরক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় আশাশুনি উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থানীয়  সর্বস্তরের মানুষের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, মীর আবু বকর, অঞ্জলি বিশ্বাস এবং কারিতাস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার ডাঃ সুমন কুমার মালাকার প্রমুখ।

মানববন্ধন থেকে জলবায়ুু পরিবর্তনজনিত কারণে অভিবাসিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন করে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা, তাদের জন্য নিরাপদ আবাসন, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি (ভিজিডি, ভিজিএফ, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্ত ভাতা, বয়স্ক ভাতা ইত্যাদি) প্রদানে অগ্রাধিকার প্রদান করা, অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, নদীভাঙন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়।

এসময় প্রতাপনগর এলাকার নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন ও ফাতেমা খাতুন বলেন, আশাশুনি উপজেলাটি অধিক দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। এ উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের সর্বশেষ সীমান্তে প্রতাপনগর ইউনিয়ন সুন্দরবনের খুব কাছে অবস্থিত। জলবায়ুু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এই অঞ্চলে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ ঘটে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ুু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙনের কারণে অনেক পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়ে শহরের বিভিন্ন বস্তি ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। এ সকল স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর জীবিকা, আশ্রয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। তাঁদের মতে, ¯ায়ী বেড়িবাঁধ বাস্তবায়ন হলে প্রতাপনগরের মানুষ পুনরায় ঘরবাড়ি গড়তে পারবে এবং স্বাভাবিকভাবে নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন