স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ভুলে খুলনায় লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনে দীর্ঘসূত্রিতা কাটছে না। ফলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা থাকলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এতে করোনা চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার পরও রোগীরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনা চিকিৎসায় রোগীদের নিরবিচ্ছিন উচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য সরকার সারাদেশে জরুরী ভিত্তিতে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে গত ১ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারাদেশের কোভিড ১৯ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে এবং রোগীদের নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের জন্য দেশের ২৩ টি হাসপাতালে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরাসরি ক্রয়ের অনুমতি দেয়া হল।
এর আগে অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে আরও ৩৯টি সরকারি হাসপাতালকে সরাসরি দ্রুততার সাথে লিক্যুইড অক্সিজেন্ট প্লান্ট স্থাপনের অনুমতি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই ৬২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৫টি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, ৫টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ১২টি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। তবে এতো হাসপাতাল থাকলেও এর মধ্যে স্থান হয়নি খুলনা বিভাগের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল বা খুলনা মেডিকেল কলেজের নাম। অথচ নাম রয়েছে আগে থেকে লিক্যুইড অক্সিজেন প্লান্ট থাকা খুলনার বিশেষায়িত হাসপাতার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের।
অপর নামটি খুলনা সদর হাসপাতালের, যারা এখনও করোনা চিকিৎসা শুরুই করেনি। এতে খুলনার করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটি দারুণভাবে হতাশ হলে তৎক্ষণাত তারা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগযোগ করলে বিষয়টি অনাকাংখিত ভুল হিসাবে উল্লেখ করে সংশোধনের জন্য আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু এ আশ্বাসের পর ২০ দিন পার হলেও এখনও তেমন কোন অগ্রগতি নেই এ কাজে। ফলে করোনা চিকিৎসায় বর্তমানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলেও তা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারছে না খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খুমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, একাধিকবার খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আলাদা চিঠি দিলেও এ কাজে অদৃশ্য কারণে বিলম্বিত হচ্ছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী ডাঃ মোঃ মেহেদী নেওয়াজ খুলনা গেজেটকে বলেন, বর্তমানে করোনা চিকিৎসায় রোগীদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাইফ্লো অক্সিজেন দেয়া, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা সংগ্রহ করা হলেও অক্সিজেন প্লান্ট এর অভাবে তা পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সিলিন্ডার নির্ভর অক্সিজেন সাপ্লাই থাকলে তাতে হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা ব্যবহার করা যায় না। আমরা শুনেছি খুলনা মেডিকেলের নামে বরাদ্দ হওয়া অক্সিজেন প্লান্টের অনুমতিপত্রে ভুলে আবু নাসের হাসপাতালের নাম এসেছে। এরপর আমি নিজে একাধিবার চিঠি দিয়েছি, মেয়র ও বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় ঢাকায় যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু এখনও সংশোধনী আসেনি। ফলে এ প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের।
খুলনা গেজেট / এমবিএইচ/ এমএম