বুধবার । ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বৃহস্পতিবার

গেজেট প্রতিবেদন

অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দেশের ছয়টি বিভাগে মোট ১০ হাজার ২১৯টি পদে নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিটি জাতীয় পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামীকাল পাওয়া যাবে। আমরা আজই সব প্রস্তুত শেষ করে পত্রিকা অফিসে পাঠিয়েছি।

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মারাত্মক শিক্ষক সংকটে রয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য পড়ে আছে। এ ছাড়া প্রায় ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পদোন্নতি হলে আরও ৩২ হাজার পদ শূন্য হবে।

তবে নানা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এত দিন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি। নারী, মুক্তিযোদ্ধাসহ ৬০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বাদ দিতে আগের বিধিমালাটি বাতিল করা হয়। পরে গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রকাশ করা হয়।

নতুন বিধিমালায় সংগীত শিক্ষক পদ যুক্ত করা হলে তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ধর্মভিত্তিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র আপত্তির মুখে সরকার অবশেষে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা পদ বাতিল করে বিধিমালাটি সংশোধন করে। গত ২ নভেম্বর সংশোধিত বিধিমালা প্রকাশের পর নিয়োগের সব বাধা কেটে যায়।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি)- এই চার বিষয়ে। মোট ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজিতে ২৫ করে ৫০ নম্বর এবং গণিত ও সাধারণ জ্ঞানে ২০ করে ৪০ নম্বর থাকবে।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে, যার মান ১০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪৫ এবং মৌখিকে ৫। লিখিত পরীক্ষার সময় থাকবে ৯০ মিনিট, তবে মৌখিক পরীক্ষার সময় নির্ধারিত নয়।

এর আগে, গত রোববার (২ নভেম্বর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘বিধি ৭ এর উপ-বিধি (২) এর দফা (খ)’-এ উল্লেখিত ‘অন্যান্য বিষয়ে’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দ প্রতিস্থাপিত হবে।

তারও আগে, ২০২৫ সালের ২৮ আগস্ট প্রকাশিত মূল বিধিমালায় বলা হয়েছিল, সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করা হবে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের জন্য এবং ৮০ শতাংশ পদ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। নতুন সংশোধনিতে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দ যুক্ত করায় বিজ্ঞান ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে স্নাতকদের অন্তর্ভুক্তি আরও সুস্পষ্ট করা হয়েছে।

বিধিমালার তফসিল–১-ও সংশোধন করা হয়েছে, যেখানে শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি ও প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশোধিত বিধি অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া উপজেলা বা থানাভিত্তিকভাবে সম্পন্ন হবে। এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য মোট ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন