এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জোয়েল মোকির, ফিলিপ আগিয়ন এবং পিটার হাওইট। ‘উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব’ ব্যাখ্যার জন্য তাদের যৌথভাবে এ পুরস্কার দেয়া হয়। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস।
এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘স্ভেরিজেস রিক্সব্যাংক প্রাইজ ইন ইকোনমিক সায়েন্সেস ইন মেমরি অব আলফ্রেড নোবেল’, যা এ বছর নোবেল সিরিজের শেষ পুরস্কার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার)। খবর রয়টার্স, সিএনএনের।
নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে,‘লরিয়েটরা (নোবেলজয়ী) আমাদের শিখিয়েছেন-টেকসই প্রবৃদ্ধি কখনোই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটে না। মানব ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় অর্থনৈতিক স্থবিরতাই ছিল স্বাভাবিক অবস্থা, প্রবৃদ্ধি নয়। তাদের গবেষণা দেখিয়েছে, ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখতে হলে হুমকিগুলোর প্রতি সচেতন থেকে তা মোকাবিলা করতে হবে।’
ঘোষণা অনুযায়ী, পুরস্কারের অর্ধেক পাবেন জোয়েল মোকির, আর অন্য অর্ধেক ভাগাভাগি করবেন ফিলিপ আগিয়ন ও পিটার হাওইট।
মোকির যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। আগিয়ন প্যারিসের কলেজ দ্য ফ্রঁস ও ইনসিয়াড– এর অধ্যাপক, পাশাপাশি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস– এরও শিক্ষক। হাওইট যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক।
নোবেল কমিটির সদস্য জন হাসলার বলেন,‘জোয়েল মোকির ঐতিহাসিক গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ধারাবাহিকতা কীভাবে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তোলে।’
তিনি আরও জানান,‘ফিলিপ আগিয়ন ও পিটার হাওইট ‘সৃজনশীল ধ্বংস’ (ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন)– এর গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন— যেখানে নতুন ও উন্নত পণ্য পুরোনোকে প্রতিস্থাপন করে এক অন্তহীন চক্রে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখে।’
এ বছরের চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, শান্তি ও সাহিত্য-এই পাঁচটি বিভাগে নোবেল পুরস্কার ইতোমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে।
এই পুরস্কারগুলোর সূচনা করেন সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ব্যবসায়ী আলফ্রেড নোবেল, যিনি ডিনামাইটের আবিষ্কর্তা। ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়, যদিও দুই বিশ্বযুদ্ধের সময় কিছু বছর তা বন্ধ ছিল।
অর্থনীতিতে নোবেল তুলনামূলকভাবে নতুন। এটি প্রথম চালু হয় ১৯৬৯ সালে, যখন নরওয়ের র্যাগনার ফ্রিশ ও নেদারল্যান্ডসের জান টিনবারগেন ‘ডাইনামিক ইকোনমিক মডেলিং’-এর কাজের জন্য পুরস্কার পান। টিনবারগেনের ভাই নিকোলাস টিনবারগেন পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে চিকিৎসায় নোবেল পান।
যদিও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বব্যাপী পরিচিত মুখ নন, তবুও নোবেলজয়ীদের তালিকায় আছেন সুপরিচিত নাম- বেন বার্ন্যাঙ্কি, পল ক্রুগম্যান ও মিল্টন ফ্রিডম্যান-যারা অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব রেখে গেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে

