জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ও তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মামুনুর রশীদ নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন হলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় মাওলানা মামুনের পরিবার ও সহযোদ্ধারা সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন।
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নিখোঁজ মামুনুর রশীদের সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করে তার পরিবার। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামুনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান বক্তারা।
মামুনের স্ত্রী খাদিজা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, পাঁচদিন ধরে আমার স্বামীকে পাচ্ছি না। আমি কোথায় গেলে সন্তানদেরকে তার বাবাকে ফিরিয়ে দিতে পারব? সরকার কী পারে না মাওলানা মামুনকে ফিরিয়ে দিতে? আমার স্বামীকে ছাড়া অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের মাদরাসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমার সন্তান সারাক্ষণ বাবার খোঁজ করে। ওকে আমি কীভাবে বুঝাবো? আমার স্বামীকে জুমাআর দিনেও কি পাব না?
এসময় তিনি নিরাপদে স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসনসহ সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মামুনের মা-বাবা সন্তানের জীবিত ফেরার আকুতি জানান। তারা দুজনই সন্তানের শোকে ভেঙে পড়েছেন।
স্থানীয় জামায়াত নেতা কামরুল ইসলাম বলেন, চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশেও গুম-খুনের বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে হচ্ছে এটা আমাদের জন্য লজ্জার। এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখব? জুলাই বিপ্লবীদের সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই জুলাই যোদ্ধাদের এভাবে নিখোঁজ হতে হয়, ধিক্কার।
প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, মামুন নিখোঁজ হওয়ার আগের রাতে তাকে যারা হুমকি দিয়েছিল তারা কোথায়? তাদের বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? তাদেরকে পুলিশ-প্রশাসন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে? এসবের উত্তর আমাদের দিতে হবে। পাঁচদিন অতিবাহিত হচ্ছে অথচ এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া গেল না কেন?
এর আগে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর তুরাগের হানিফ আলী মোড় এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন মাওলানা মামুনুর রশীদ। তিনি তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে উত্তরার রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ ঘটনায় ২২ সেপ্টেম্বর তুরাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মাওলানা মামুনের স্ত্রী খাদিজা বেগম।
খুলনা গেজেট/এনএম