যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমান এর গত মঙ্গলবার রাত হতে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পরিত্যক্ত বোয়িং-৭৮৭-৮ বিমানটি দুবাইয়ে রেখেই ১৭৮ যাত্রীসহ বৃহস্পতিবার রাতের ফ্লাইটের নির্ধারিত যাত্রীদের নিয়ে অর্থাৎ দুই ফ্লাইটের যাত্রীদের একই সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এয়ারক্রাফট এ করে দুবাই থেকে সিলেট ভায়া হয়ে ঢাকায় আনা হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাই রিজিওনাল ম্যানেজার সাকিয়া সুলতানা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে নির্ধারিত বিজি-২৪৮ ফ্লাইটটি দুবাই-ঢাকা-ভায়া-সিলেট রওনা হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে টেকনিক্যাল ত্রুটি হওয়ায় তা পরিত্যক্ত হয়। যাত্রীদের হোটেল দেয়া হয়। বুধবার রাতে ঢাকা দুবাইয়ের আরেকটি নিয়মিত ফ্লাইটে করে এয়ার ক্রাফটির যন্ত্রাংশ আনা হলে তখন থেকেই তা স্থানীয়ভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় তাদেরকে নিয়মিত এয়ারক্র্যাফটের পরিবর্তে একটি সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ দেয়া হলো। এতে বৃহস্পতিবার ও মঙ্গলবারের দুটি ফ্লাইটের যাত্রী একসাথে দেশে যাওয়ার সুযোগ হলো। এয়ারক্রাফটটির ধারণ ক্ষমতা ৪১৯।”
এই ফ্লাইটে করে ঢাকা থেকে একটি টেকনিক্যাল টিমও এসেছেন বলে জানা গেছে। সাকিয়া সুলতানা জানিয়েছেন, ‘পরিত্যক্ত এয়ারক্রাফটটির কুলিং সিস্টেম এখনো কাজ না করায় আমরা এই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ‘
ফ্লাইটটি দুবাই স্থানীয় সময় গত রাত ১০-১৫ টায় ঢাকা থেকে দুবাই এসে পৌঁছাছে এবং দুবাই থেকে রাত ১২টা ৫ মিনিটে বিজি-২৪৮ হয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। আজ শুক্রবার সকাল ৬ টা ৫০ মিনিটে এটি সিলেট পৌঁছেছে এবং এক ঘন্টা যাত্রাবিরতির পর সকাল ০৮ টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ফলে দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার অবর্ণনীয় দুর্ভোগের পর বিমান যাত্রীরা দেশের মাটি স্পর্শ করলো।
উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সিলেটের পথে উড়াল দেয়ার কথা ছিল বিজি-২৪৮ নং ফ্লাইটটি। গত মঙ্গলবার দুবাই সময় রাত ১২-০৫ টায় দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে সিলেটের উদ্দেশে উড়াল দিয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ০৭-০৫টায় সিলেট এমএজি ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এ অবতরণের কথা ছিল। এখানে এক ঘন্টা যাত্রাবিরতির পর এটি চুড়ান্ত গন্তব্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবার কথা।নির্ধারিত সময়ে এয়ারক্রাফটটিতে ১৭৮ জনকে অনবোর্ড করার পর সেটি উড়াল দেয়ার মুহূর্তে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা “টেকনিক্যাল ” ঘোষণা করা হয়।ফলে দূর্ভাগা যাত্রীদের দীর্ঘ বিড়ম্বনার পর হোটেল দেয়া হয়। ১৭৫ জনকে হোটেল্ল দেয়া হলেও ভিসা জটিলতার কারণে ৩ জনকে এয়ারপোর্ট লাউঞ্জেই রেখে দেয়া হয়।বুধবার দুবাইর স্থানীয় সময় রাত ১০-৩০ টায় বিমানের ঢাকা-দুবাই এর আরেকটি নিয়মিত ফ্লাইট বিজি-৩৪৭ যোগে দুবাই এয়ারপোর্টে পরিত্যক্ত বিমানটি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্রাংশ আনা হয়।দুবাইয়ে বিমান এর সাথে কৃত চুক্তি অনুযায়ী কুয়েত এয়ারওয়েজের টেকনিক্যাল টিম পরিত্যক্ত এয়ারক্রাফটটির মেরামতের কাজ শুরু করে।
কথা ছিল বুধবার দিবাগত রাত অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত ০১-৩০টায় বিজি-২৪৮ ফ্লাইটটি মেরামতের পর দুবাই থেকে সিলেটের পথে রওয়ানা হয়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ০৮-০৫ টায় সিলেট এমএজি ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এ অবতারণ করবে।এদিকে ২১ ঘন্টা হোটেলে থাকার পর বুধবার রাত ০৯-০০টায় যাত্রীদের হোটেল থেকে দুবাই এয়ারপোর্টে আনা হয়। তারা দুবাই এয়ারপোর্টে থাকা কালে জানানো হয় পরবর্তী ভ্রমণের শিডিউল, অর্থাৎ এখন বিমান ছাড়া হবে স্থানীয় সময় ভোর ০৪-৩০ টায়। এই সময়সীমার মধ্যেও বিমানের মেরামত সম্পন্ন না হওয়ায় শিশু, মহিলা, প্রবীণ সহ বিভিন্ন বয়েসী যাত্রীদের যারপরনাই দূর্দশার মধ্যে এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে রাত্রি যাপন করতে হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম