বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী এবং ধর্ম, মত বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না। আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পুরো জাতি একটি পরিবার। পরিবারের ভেতরে মতভেদ থাকতে পারে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পরিবার একটি অটুট জিনিস এটাকে কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা যেন জাতি হিসেবে এই অটুট পরিবার হয়ে দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার। রাষ্ট্র দায়িত্ববদ্ধ সবাইকে সমান মর্যাদা দেয়ার জন্য। সে যেই ধর্মেই বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই বিশ্বাস করুক, ধনী হোক কিংবা গরিব রাষ্ট্রের কাছে সে একজন নাগরিক। নাগরিকের সকল অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা নিজেরা বিভক্ত হলে জাতি হিসেবে ব্যর্থ হয়ে যাব, ব্যর্থ হতে চাই না। নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে।’
ধর্মীয় উৎসব মুক্ত পরিবেশে পালনের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে নয়, মুক্তভাবে সবাই নিজেদের ধর্ম পালন করতে চায়। এমন রাষ্ট্র বানাতে চাই, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী নয়, মুক্তভাবে সবাই মিলে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারবে। যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক না কেন, সরকার কারও প্রতি কোনো পার্থক্য করবে না।’
এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা। তারা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
এ সময় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
সনাতন ধর্মীয় নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজা মণ্ডপ প্রস্তুতের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
খুলনা গেহেট/এমএম