গৃহপরিচারিকার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

ডাঃ লাকিসহ ৮ জনের নামে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাজ থেকে অবসর নেওয়ার কথা বলায় গৃহপরিচারিকার ওপর নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রফেসর ডাঃ সামসুর নাহার লাকির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর মোসাঃ আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে সামসুর নাহার লাকিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই আদালতের বিচারক বিষয়টি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে আগামী ৩০ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, আলিমুর রেজা, মিসেস মালি, কাজী আবুল হাসান, মোহাম্মাদ আলী, মোঃ ইলিয়াস, শাওলী হাসান এবং রাদ হাসান। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এড. এম মাফতুম আহমেদ।

বাদীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আকলিমা খাতুন ১৯৯৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ডাঃ সামসুর নাহার লাকির বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময় শারীরিক এবং পারিবারিক কারণে তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার কথা চিকিৎসক সামসুর নাহার লাকিকে জানান। এ কথা শোনামাত্র তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন ওই চিকিৎসক।

২৭ জুলাই সামসুর নাহার লাকির নির্দেশে আকালিমাকে অবরুদ্ধ করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তার অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসক ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যান। ২ আগস্ট ঢাকা থেকে ফিরে এসে আবারও তাকে ভয়ভীতি দেখান। উপস্থিত আলিমুর রেজা ও কাজী আবুল হাসানের কিল ঘুষিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আকলিমা। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ব্যাংক জমানতকৃত ডিপিএসের ৬ লাখ ৬১ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করে নেয়। এ ঘটনার পরও সামসুর রহমান লাকি ক্ষান্ত হননি। তার নির্দেশে তাকে আবারও আটকিয়ে রাখে দু’লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ জায়গা জমি লিখে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পরবর্তীতে ছেলে এবং ভাই মুচলেকা দিয়ে তাকে সেখান থেকে মুক্ত করে নেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর চিকিৎসক সামসুর নাহার লাকিকে লিগ্যাল নোটিস এবং স্থানীয় থানা ও পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু এসবের কোন উত্তর না দিয়ে গৃহপরিচারিকা আকলিমাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন তিনি।

আইনজীবী মাফতুম আহমেদ বলেন, “আদালত মামলা নিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তভার খুলনার পিবিআইকে দিয়েছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।”

আকলিমার ভাই বলেন, ৯৮ সালে স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর সামসুর নহার লাকির বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় তার বোন আকলিমা খাতুন। বয়সের ভারে কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলায় তার ওপর নির্যাতন চালায় চিকিৎসক পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতন করে ছাড় পাননি তারা অব্যাহত হুমকির মধ্যে রয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন