বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল কাইয়ুমের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বিকেল ৫টায় উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল কাইয়ুমের স্মরণানুষ্ঠান পরিষদ এর আয়োজক। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন। টুটপাড়া কবরখানায় তার দাফন হয়।
১৯৫০ সালের ১৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। শেখ আব্দুল কাদের তার পিতা ও আমিরা বানু বেগম তার মা। তিনি আযমখান কমার্স কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন। পাশাপাশি ১৯৬৯ সালে ঐতিহাসিক ১১ দফা আন্দোলনেও অংশ নেন। ১৯৬৮-৬৯ সালে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৭১ স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদের জেলা সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিলগ্নে জয়বাংলা বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। জিলা স্কুল মাঠে জয়বাংলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ শহীদ হাদিস পার্কে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৭২ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৭৩ সালে সদ্য গঠিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালে জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
হাদিস পার্কে স্থাপিত খুলনার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ভাস্কর্য দুর্জয়-৭১ স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা। ১৯৬৮ সালে সাপ্তাহিক দেশের ডাক পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতার সাথে সম্পৃক্ত হন। এছাড়া গণকণ্ঠ ও ডাক দিয়ে যাই পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে খুলনা শহরে পাক বাহিনী শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকলে ভারতের হাফলং-এ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যাচে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ সময় তার সতীর্থ ছিলেন বাগেরহাটের অশোক কুমার দেবনাথ, বটিয়াঘাটার বিনয় সরকার, খুলনার আ ব ম নুরুল আলম, ইস্কান্দার কবির বাচ্চু, তপন বিশ্বাস ও শামসুল আলম হিরা। প্রশিক্ষণ শেষে বারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে সাতক্ষীরার তালা থানার বিএলএফ ক্যাম্পে আসেন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের কপিলমুনির যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। কপিলমুনিতে যুদ্ধাপরাধীদের গণ আদালতের বিচারের রায় কার্যকর করেন। ১৪-১৭ ডিসেম্বর গল্লামারীর রেডিও সেন্টার দখলের যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি উমেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী, শিশু ফাউন্ডেশন ও সেক্টর কমান্ডার ফোরামে জড়িত ছিলেন।